টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে যত তথ্য রয়েছে তা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিব। ২০২৪ সাল থেকে করযোগ্য আয় না থাকলেও জিরো রিটার্ন দাখিলার পাশাপাশি ২,০০০ কর দিতে হবে। তাই অপ্রয়োজনে কর প্রদানের ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে জেনে নিন- টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য কোন সুস্পষ্ট অনলাইন ব্যবস্থা নেই। পরপর ৩ বছর শূন্য রিটার্ন দাখিলা জমার পর সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করে রেজিস্ট্রেশন বাতিল বা সাসপেন্ড করতে হয়। ২০২৪ সালে নতুন আয়কর আইনে, পরপর তিন বছর শূন্য রিটার্ন দাখিলা জমা ব্যতীত টিন বাতিলের সুযোগ রয়েছে।

এক্ষেত্রে শুধু করযোগ্য আয় না থাকলেই আবেদন করতে পারবেন। তবে শুধুমাত্র উপ-কর কমিশনারের যথাযোগ্য মনে হলেই তা বাতিল বা স্থগিত করবেন। টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪৪ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো-

টিন সার্টিফিকেট থাকলেই কি কর দিতে হয়

পূর্বে করযোগ্য আয় না থাকলে শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলা দিতে হতো। তবে বর্তমানে, ২০২৪-২০২৪ বাজেটে, যে সকল করদাতার রিটার্ন দাখিলের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাদের বাৎসরিক আয় করমুক্ত সীমার মধ্যে থাকলেও নুন্যতম ২০০০ টাকা কর ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়।

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের শেষে ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে বাধ্যতামূলক এই ২০০০ টাকা কর পরিশোধ করতে হবে। টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ মেনে এটি বাতিল না করলে জরিমানা ও আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে।

কখন টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার প্রয়োজন হয়

টিন সার্টিফিকেটের আওতায় কর প্রদানের নীতিমালা হলো-

  • বাৎসরিক আয় ৩ লক্ষ টাকা বা তার বেশি হলে কর দিতে হয়।
  • ৬৫ বছরের বেশি বয়সী কোন মহিলার বাৎসরিক আয় ৩.৫ লক্ষ টাকা হলে কর দিতে হয়।
  • বর্তমানে, করযোগ্য আয় না থাকলেও প্রতি অর্থবছরে ন্যূনতম ২০০০ টাকা আয়কর রিটার্ন দাখিলা প্রস্তাব করা হয়েছে।

এমতাবস্থায়, আপনার করযোগ্য উপার্জন না থাকলেও ট্যাক্স পরিশোধ করা অনেকটাই অর্থহীন। তাই টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী এটি স্থগিত (Suspend) করা প্রয়োজন।

টিন সার্টিফিকেট বাতিলের বিষয়ে আয়কর আইন

আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর 75(1b) অনুযায়ী, যদি পরপর ৩ অর্থ বছরের মধ্যে ব্যক্তির করযোগ্য আয় থাকে, তবে তাকে কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। এবং পরপর ৩ বছরের মধ্যে আপনার কোন করযোগ্য আয় না থাকলে আপনাকে আয়কর রিটার্ণ দাখিল করতে হবে না।

টিন সার্টিফিকেট বাতিলের বিষয়ে আয়কর আইন
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের বিষয়ে আয়কর আইন

কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই, আপনার বাৎসরিক উপার্জন ৩ লক্ষ টাকার কম (৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলাদের- ৩.৫ লক্ষ), তার প্রমান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই টিন সার্টিফিকেট বাতিল বা স্থগিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার শর্তাবলী

তিন সার্টিফিকেট তৈরি করা যতটা সহজ তা বাতিল করা ততটাই কঠিন। নির্দিষ্ট সময় পর টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হয়। যে যে শর্তে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারবেন সেগুলো হলো-

  • টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য সরাসরি ট্যাক্স সার্কেল এর উপ-কর কমিশনারের কাছে আবেদন করতে হবে।
  • পরপর তিন বছর ট্যাক্স অফিসে শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
  • পরপর তিন বছর করযোগ্য আয় (বাৎসরিক ৩ লক্ষ টাকা) না থাকলে।
  • করদাতা মৃত্যুবরণ করলে এবং সেই টিন আইডি পরিচালনার ব্যবস্থা না থাকলে। (মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগন টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার আবেদন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা স্থায়ীভাবে বাতিল করবে।)
  • টিন সার্টিফিকেটধারী ব্যক্তি স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করলে।
  • নন রেসিডেন্ট বিদেশী নাগরিক যার বাংলাদেশে কোন স্থায়ী ভিত্তি নেই।
  • শারীরিক অক্ষমতার কারণে করযোগ্য আয় না থাকলে।
  • পূর্বে করযোগ্য আয় ছিল বর্তমানে নেই এমন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারবে।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে কি কি লাগে

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী স্বল্প কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হয়-

  • বর্তমান টিন সার্টিফিকেটের প্রিন্ট কপি।
  • পরপর তিন বছর শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলার কপি বা প্রমাণপত্র।
  • জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
  • ১২ ডিজিটের TIN নাম্বার।

করদাতা মারা গেলে, টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে কি কি লাগে

করযোগ্য আয় না থাকলে, টিন রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে কি কি লাগে

  • লিখিত দরখাস্ত
  • টিন সার্টিফিকেট এর কপি
  • পূববর্তী আয়কর রিটার্নের দাখিলা
  • টিন-ধারীর এনআইডি কার্ডের কপি

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম

বর্তমানে ট্যাক্স কমিশন অনুযায়ী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিন সার্টিফিকেট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে প্রয়োজনে তা পুনরায় চালু করা যায়। তবে নির্দিষ্ট কিছু শর্তে স্থায়ীভাবে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করা যায়। আপনার টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন-

ধাপ ১: শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল

টিন সার্টিফিকেট রেজিস্টার করে ফেললে চাইলেই তা বাতিল করা যায়না। সেজন্য প্রথমে পরপর ৩ বছর আপনাকে শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলা প্রদান করতে হবে। শূন্য আয়কর রিটার্ন নমুনা-

শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল
শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল

ধাপ ২: সংশ্লিষ্ট ট্যাক্স সার্কেল অফিসে উপস্থিত

আপনার টিন সার্টিফিকেটটি যেই ট্যাক্স সার্কেলের আওতায় রেজিস্টার করা হয়েছে, সেখানে উপস্থিত হতে হবে। কর গ্রহণে করদাতাদের সুবিধার জন্য বাংলাদেশে কর বিভাগকে ৩১ টি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। এই ৩১ টি অঞ্চল ৬৪৯ টি সার্কেলে বিভক্ত, যার একটি করে অফিস রয়েছে। টিন সার্টিফিকেটের উপরেই সার্কেল অফিসের তথ্য দেওয়া থাকে। সেখানে উপস্থিত হয়ে আবেদন করুন।

ধাপ ৩: প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সহ দরখাস্ত পূরণ

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী কর অফিসে একটি দরখাস্ত লিখুন। একইসাথে বিগত শূন্য আয়কর রিটার্নের দাখিলা, টিন সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিন।

ধাপ ৪: ট্যাক্স সার্কেলের ডেপুটি ট্যাক্স কমিশনার বরাবর আবেদন

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য অনলাইনে কোন প্রক্রিয়া নেই। তাই সরাসরি ট্যাক্স সার্কেলের ডেপুটি ট্যাক্স কমিশনারের কাছে দরখাস্ত দাখিল করুন। উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করে তথ্য ও ডকুমেন্টস জমা দিন।

তারপর উপ-কর কমিশনার তা যথাযুক্ত মনে করলে টিন সার্টিফিকেটের ফাইলটি নথিস্ত করে সাসপেন্ড করবে।

শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য করমুক্ত আয়সীমা 

সাধারণত একজন TIN সার্টিফিকেট ধারী ব্যক্তির জন্য শূন্য আয়কর রিটার্ন তখনই হয় যখন তার বাৎসরিক মোট আয়ের পরিমাণ করমুক্ত আয়সীমার নিচে থাকে। এক্ষেত্রে নিম্নোক্তভাবে করমুক্ত আয়সীমা নির্নয় করা হয়:

  • সাধারণ করদাতার ক্ষেত্রে বাৎসরিক ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় হলে কর পরিশোধ করতে হবে।
  • নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতাদের ক্ষেত্রে বাৎসরিক আয়ের পরিমাণ ৪ লক্ষ টাকা বা তার বেশি হলে কর পরিশোধ করতে হবে।
  • প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদের ক্ষেত্রে বাৎসরিক আয়ের পরিমাণ ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা হলে কর পরিশোধ করতে হবে।
  • প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা প্রতিবন্ধী পোষ্যের অভিভাবকদের বাৎসরিক আয়ের পরিমাণ ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হলে কর পরিশোধ করতে হবে।
  • গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বাৎসরিক আয়ের পরিমাণ ৫ লক্ষ টাকা হলে কর পরিশোধ করতে হবে। 

উপরোক্ত তথ্যানুসারে, নির্দিষ্ট করদাতাদের বাৎসরিক আয় করমুক্ত আয়সীমার নিচে হলে শূন্য রিটার্ন জমা দিতে পারবে।

স্থায়ীভাবে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার উপায়

২টি কারণে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করা সম্ভব। যথা-

  1. করদাতা মারা গেলে,
  2. করযোগ্য আয় না থাকলে

নিচে এ ধরনের টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম তুলে ধরা হলো-

করদাতা মারা গেলে টিন রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম

যার নামে টিন সার্টিফিকেট করা সেই ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে এবং ভবিষ্যতে সেই সার্টিফিকেট দ্বারা কোন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালিত না হলে,TIN বাতিল করা যায়।

ইনকাম ট্যাক্স অর্ডিন্যান্স ১৯৮৪ এর সেকশন 75 (2b) অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তির টিন সার্টিফিকেট কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে থাকলে তার কর দিতে হবে। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা ওয়ারিশ রিটার্ন দাখিলা ও (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) আয়কর দিবে।

তবে, সেই TIN Certificate – অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ব্যবহৃত না হলে, মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা উপকর কমিশনারের কাছে বাতিলের দরখাস্ত করবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সেই দরখাস্ত যাচাই-বাছাই করে, TIN রেজিস্ট্রেশন সাসপেন্ড বা স্থায়ীভাবে বাতিল করে দিবে।

করযোগ্য আয় না থাকলে টিন রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম

যদি কোন টিনধারীর করযোগ্য আয় না থাকে, তাহলে বিনা কারণে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা অর্থহীন। তাই টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী এটি বন্ধ করা প্রয়োজন।

ধারাবাহিকভাবে, ৩ বছর শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করার পর, টিন সার্টিফিকেটে উল্লেখিত ট্যাক্স সার্কেল অফিসে উপ-কর কমিশনারের কাছে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে আবেদন করতে হবে। করযোগ্য আয় না থাকলে উপ-কর কমিশনার তা যাচাই করে, রেজিস্ট্রেশন বাতিল বা স্থগিত করবেন।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার দরখাস্ত

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী সরাসরি ট্যাক্স সার্কেলের উপ-কর কমিশনারের কাছে লিখিত দরখাস্ত দিতে হয়। দরখাস্তের সাথে টিন সার্টিফিকেট ও এনআইডি কার্ড এর কপি সংযুক্ত করতে হয়। নিচে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার দরখাস্তের নমুনা দেওয়া হলো-

(তারিখ:
বরাবর,
উপ-কর কমিশনার,
কর অঞ্চল-১, কুমিল্লা

বিষয়: টিন রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য আবেদন।

জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী সঞ্চয়পত্র ক্রয়/ ব্যবসায়/ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য একটি টিআইএন রেজিস্ট্রেশন করি। গত ৩ বছর ধরে আমার করযোগ্য আয় নেই। আমার আয়ের উপর কর ধার্য না হওয়ায় ধারাবাহিকভাবে ৩ বছর শূন্য রিটার্ন দাখিল করে আসছি। বর্তমানে আমার করযোগ্য আয় না থাকায় আমি টিআইএন রেজিস্ট্রেশন নং- ১৭৮২০৮২৭৯১৫৪ বন্ধ করতে ইচ্ছুক।

অতএব, মহোদয়ের নিকট আবেদন এই যে, আমার করযোগ্য আয় না থাকায় অনুগ্রহপূর্বক উক্ত টিআইএন সার্টিফিকেট বন্ধ করলে উপকৃত হব।

সংযুক্তি:
(১) বর্তমান TIN Certificate -এর প্রিন্ট কপি।
(২) পূববর্তী আয়কর রিটার্নের রিসিট।
(৩) এনআইডি কার্ডের কপি।

বিনীত নিবেদক
মুহাম্মদ জহিরুল
মেঘনা, কুমিল্লা।
টিআইএন নম্বর:১৭৮০৮৭৯১৪ ট্যাক্স সার্কেল -০১৮, ট্যাক্স জোন-০১, কুমিল্লা মোবাইল নম্বর: ০১৯৫)

টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কিত সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর (FAQ’s)

(১) E Tin মানে কি?
E-TIN বা Electronic Taxpayer’s Identification Number – হলো আয়কর নিবন্ধনের আধুনিক সংস্করণ। এটি National Board of Revenue (NBR) কর্তৃক করদাতা সনাক্তকরণ ও কর আদায়ে ব্যবহৃত হয়।

(২) টিন সার্টিফিকেট কি জিনিস?
টিন সার্টিফিকেট হলো একজন করদাতার আইডেন্টিফিকেশন ডকুমেন্ট। আয়কর কমিশন কর প্রদানকারীদের ১২ ডিজিটের TIN Number সম্বলিত এই সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে।

(৩) টিন সার্টিফিকেট করতে কত টাকা লাগে?
টিন সার্টিফিকেট বর্তমানে একটি অনলাইন ভিত্তিক সেবা। যেকেউ তার এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে নিজের মোবাইল দিয়ে বিনামূল্যে টিন সার্টিফিকেট করতে পারবে।

(৪) ট্যাক্স সনাক্তকরণ নম্বর কি?
বাংলাদেশের করদাতাদের সনাক্তকরণের জন্য প্রত্যেককে ইউনিক TIN নম্বর দেওয়া হয়। টিন সার্টিফিকেটে থাকা ১২ সংখ্যার এই নম্বরটি করদাতা সনাক্তকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

(৫) করের হার কত?
বর্তমান বাংলাদেশে আয়করের হার-
৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত – ০ টাকা।
পরবর্তী ১ লক্ষ টাকায় মোট আয়ের উপর- ৫%।
পরবর্তী ৩ লক্ষ টাকায় মোট আয়ের উপর- ১০%।
পরবর্তী ৪ লক্ষ টাকায় মোট আয়ের উপর- ১৫%।
পরবর্তী ৫ লক্ষ টাকায় মোট আয়ের উপর- ২০%।

(৬) টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার দরখাস্ত?
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী সরাসরি ট্যাক্স সার্কেলের উপ-কর কমিশনারের কাছে লিখিত দরখাস্ত দিতে হয়।

(৭) কর না দিলে কি হবে?
সময়মতো কর পরিশোধ না করলে, ৩ ধরনের জরিমানা করা হয়। যথা-
১। বকেয়া আয়করের উপর ২৫% সুদ।
২। বকেয়া আয়করের উপর ২% মাসিক সরল সুদ।
৩। বকেয়া আয়করের সমপরিমাণ জরিমানা।

(৮) কাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে না?
ব্যক্তিগত আয়ের করমুক্ত সীমা ৩ লক্ষ টাকা। এর কম হলে, কোনো আয়কর জমা না দিয়েই রিটার্ন দাখিলা পাওয়া যায়।

(৯) শূন্য রিটার্ন দাখিল করার নিয়ম কি?
শূন্য রিটার্ন দাখিলা রিটার্ন দাখিলার অনুরূপ। শূন্য রিটার্ন দাখিল করতে করদাতাকে নির্ধারিত ফরমে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। তারপর হিসাব অনুযায়ী করদাতার বাৎসরিক আয় করযোগ্য আয়ের নিচে হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি শূন্য রিটার্ন হিসেবে দাখিল হবে।

(১০) টিন সার্টিফিকেট সংশোধন করার নিয়ম কি?
টিন সার্টিফিকেট সংশোধন করার জন্য https://secure.incometax.gov.bd/TINHome এই লিংকে গিয়ে, একাউন্টে লগইন করুন। তারপর, View Certificate মেন্যুতে গিয়ে, Edit/Correct/Update- অপশনে ক্লিক করে সংশোধিত ও তথ্য লিখে সাবমিট করুন। পরবর্তীতে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা কর্তৃক তা সংশোধিত হবে।

(১১) টিন সার্টিফিকেট মেয়াদ কত?
একটি টিন সার্টিফিকেট রেজিস্টার করার পর করদাতার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তার মেয়াদ থাকে। প্রয়োজনে নিবন্ধনকারীর মৃত্যুর পরও তা ব্যবহার করা যায়। তবে আপনি চাইলে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী এটি স্থগিত করতে পারেন।

শেষকথা

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য করযোগ্য আয় থাকলে টিন সার্টিফিকেট রাখা বাধ্যতামূলক। তবে অপ্রয়োজনে TIN চলমান রেখে ২,০০০ টাকা আয়কর পরিশোধ করা নিষ্প্রয়োজন। উপরোক্ত টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুসরণ করে আপনার টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারবেন।

About Juyel Ahmed Liton

সুপ্রিয় “প্রোবাংলা” কমিউনিটি, ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ ছিলো এবং হয়তো সেই আকর্ষণটা অন্য দশ জনের থেকে একটু বেশি। ওয়েবসাইট, টাইপিং, আর্টিকেল লেখাসহ টেকনোলজি সবই আমার প্রিয়। জীবনে টেকনোলজি আমাকে যতটা ইম্প্রেস করেছে ততোটা অন্যকিছু কখনো করতে পারেনি। আর এই প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ থেকেই লেখালেখির শুরু.....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *