সাফওয়ান নামের অর্থ

সাফওয়ান নামের অর্থ কি? ইসলামিক কিনা, বৈশিষ্ট্য ও সঠিক বানান

আপনার শিশুর জন্য সাফওয়ান নামটি রাখতে চাচ্ছেন? তাহলে জেনে নিন, সাফওয়ান নামের অর্থ কি, নামটি ইসলামিক কিনা, নামের বৈশিষ্ট্য ও সঠিক বানান।

বাংলাদেশ নামক এই ইসলামিক রাষ্ট্রটিতে প্রায় সকল পিতা মাতারাই তার সন্তানদের জন্য একটি গুণবাচক নাম রাখতে চায়। শিশুর নাম রাখার ক্ষেত্রে নামের অর্থ কি, তা জানা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। আপনার শিশুর জন্য সাফওয়ান নামটি রাখতে চাইলে, অথবা আপনার নাম সাফওয়ান হলে, এই লেখা থেকে জেনে নিতে পারেন সাফওয়ান নামের অর্থ কি এবং এর বৈশিষ্ট সমূহ।

সাফওয়ান নামের অর্থ কি?

সাফওয়ান নামের অর্থ হলো- বিশুদ্ধ, উজ্জল। আভিধানিক ভাবে বিশ্লেষণ করলে সাফওয়ান নামের বাংলা অর্থ গুলো হয়: বিশুদ্ধ, উজ্জল, পরিষ্কার দিন, পাথর বা পর্বত, শিলা, পরিষ্কার ইত্যাদি। অর্থগত দিক থেকে শিশুদের নাম রাখার জন্য এটি একটি আদর্শ নাম। তাছাড়া আরবি পরিভাষিক বিবেচনায় এটি অত্যন্ত মার্জিত নাম।

সাফওয়ান নামের অর্থ

সাফওয়ান নামের মাঝে একইসাথে আরবি ও আধুনিক ভাব প্রকাশ পায়। বৈশিষ্ট্য গত দিক থেকেও এটি ইসলামিকভাবে বৈধ এবং আরবি অর্থ সমূহও উত্তম। ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোতে এটি তুলনামূলকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই এই গুণবাচক নামটি বহু পিতা-মাতা তার নবজাতক সন্তানের জন্য বাছাই করে থাকে।

সাফওয়ান নামটি কি ইসলামিক নাম?

হ্যাঁ। সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে সাফওয়ান নামটি একটি ইসলামিক নাম। প্রথমত, সাফার নামটি সরাসরি পবিত্র আল কুরআনে উল্লেখিত রয়েছে। সূরা বাকারা এর ২৬৪ নং আয়াতে এই নামটি খুঁজে পাওয়া যাবে। অর্থাৎ এটি সরাসরি পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত একটি শব্দ এবং নাম বা কোরআনিক নাম।

দ্বিতীয়ত, সাফওয়ান নামটি এসেছে আরবি শব্দ থেকে আর আরবরা মূলত ইসলাম ধর্মাবলম্বীর। তৃতীয়ত, সাফওয়ান নামের একজন প্রসিদ্ধ সাহাবী ছিলেন। তাই সামগ্রিকভাবে মুসলিম সন্তানদের জন্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটি একটি আদর্শ নাম হিসেবে বিবেচনা করা যায়।

সাফওয়ান নামের ইসলামিক অর্থ কি?

উপরে আমরা সাফওয়ান নামটি ইসলামিক কিনা জানতে পেরেছি। ইসলামিক নামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো নামের অর্থ গুলো ভালো এবং গুণবাচক হওয়া। আলোচ্য নামের অর্থ গুলোও ইসলামিক বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সাফওয়ান নামের ইসলামিক অর্থ হলো- বিশুদ্ধ, উজ্জল, পরিষ্কার দিন, পাথর বা পর্বত, শিলা, পরিষ্কার ইত্যাদি। এই অর্থগুলো ইসলামিক ভাবে উত্তম বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ করে। 

সাফওয়ান নামের আরবি অর্থ কি?

আমরা জানতে পেরেছি যে, সাফওয়ান নামের উৎসমূল হলো আরবি ভাষা। আরবি ভাষার এই নামটির বাংলা অর্থ বলে হলো: বিশুদ্ধ, উজ্জল, পরিষ্কার দিন, পাথর বা পর্বত, শিলা, পরিষ্কার ইত্যাদি। একইভাবে আমরা যদি এই নামের আরবি অর্থ গুলো বের করি, তাহলে সেগুলো হবে: يوم نقي، مشرق، صاف، حجر أو جبل، صخرة، واضح، إلخ.

সাফওয়ান নামের বৈশিষ্ট্য সমূহ | Safwan Name Meaning In Bengali

নামসাফওয়ান
নামের অর্থবিশুদ্ধ, উজ্জল, পাথর বা পর্বত,পরিষ্কার, শুদ্ধ, পরিষ্কার দিন, শিলা ইত্যাদি।
নামের উৎসমূলআরবী 
লিঙ্গছেলে বা পুংলিঙ্গ
নামের দৈর্ঘ্য৫ বর্ণের ১ শব্দ
নামটি ছোট কিনাহ্যাঁ
ইসলামিক নাম কিনাহ্যাঁ
উচ্চারণ সাবলীল ও শ্রুতিমধুর
ইংরেজি বানানSafwan
আরবি বানানصفوان
সুপরিচিত ও জনপ্রিয় কিনাহ্যাঁ
ব্যবহৃত দেশের নামবাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মায়ানমার, ইরান, ইরাকসহ সমগ্র বিশ্বের মুসলিমদের মাঝে।
আধুনিক নাম কিনাহ্যাঁ

Safwan Name Meaning In English

NameSafwan
Safwan name meaning in englishPure, bright, stone or mountain, clear, clean, clear day, rock, etc.
Name sourceArabic.
Name genderMale gender
Name length6 letter 1 word
Is it an islamic nameYes.
Is it fluent and melodiousYes.
Is it famousYes.
Is it a modern nameYes.

‘সাফওয়ান’ কোন লিঙ্গের নাম?

সাফওয়ান নামটি মূলত পুরুষ লিঙ্গের নাম। বিশ্বের প্রায় সকল মুসলিম দেশগুলোতে পুত্র সন্তানদের নাম রাখার ক্ষেত্রে ‘সাফওয়ান’ নামটি ব্যবহার করা হয়। এই নামের স্ত্রীবাচক শব্দ হলো ‘সাফওয়ানা’।

সাফওয়ান নামের ইতিহাস

অনেকেই নাম রাখার ক্ষেত্রে সেই নামের ইতিহাস জানতে চায়। অর্থাৎ অতীতে কোন বিখ্যাত ব্যক্তিদের সেই নামটি রাখা হয়েছিল এবং নামের ইসলামিক বৈশিষ্ট্য গুলো ইত্যাদি। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে যে, বহু বিখ্যাত ও উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের নাম রাখা হয়েছিল সাফওয়ান।

স্বপন নামের বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া’। তিনি ছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -এর একজন বিশ্বস্ত সাহাবী। ইসলাম প্রচলনের শুরুর দিকে দ্বীন-ইসলামের খেদমতে তিনি বহু কাজ করেছিলেন। মূলত তিনিই সরাসরি সাফওয়ান নামের একজন ইসলামিক ব্যক্তিত্ব।

আরও পড়ুন: নুসাইবা নামের অর্থ কি?

সাফওয়ান নামের আরেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব হলো- ‘সাফওয়ান বদর’। তিনি ছিলেন একজন আমেরিকান চিকিৎসক এবং গবেষক। ঘুমের ওষুধ তৈরীর ক্ষেত্রে তার ব্যাপক অবদান ছিল। এছাড়াও এই নামের আরো বহু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি রয়েছে।

সাফওয়ান নামের বানান

নামের অর্থ জানার চেয়ে কোন একটি নামের শুদ্ধ বানান লিখতে পারা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এই নামটির ইংরেজি ও আরবি বানান তুলে ধরা হলো:

সাফওয়ান নামের ইংরেজি বানান

সাফওয়ান নামের ইংরেজি বানান লেখার ক্ষেত্রে অনেকেই- Safowan, Safuan ইত্যাদি লিখে থাকে। তবে শুদ্ধভাবে সাফওয়ান নামের ইংরেজি বানান হলো ‘Safwan’।

সাফওয়ান নামের আরবি বানান

বাংলাদেশে কোন নামের আরবি বানানের তেমন প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে অনেকেই নিজের বা নিজের সন্তানের নামের ক্ষেত্রে আরবি বানানটি জানার আগ্রহ পোষণ করে। সাফওয়ান নামের আরবি বানান হলো- صفوان।

সাফওয়ান নামের সাথে যুক্ত নাম

  • সাফওয়ান ইসলাম
  • সাফওয়ান আলী
  • সাফওয়ান আসিফ
  • সাফওয়ান আবরার ফাহাদ
  • নুসরাত সাফওয়ান
  • জিহাদুল ইসলাম সাফওয়ান
  • সাফওয়ান সিফাত
  • সাফওয়ান হাসান
  • রিহান ইসলাম সাফওয়ান
  • সাফওয়ান সাব্বির
  • সাফওয়ান নাবিল ইমাদ
  • সাফওয়ান বিন সালমা
  • আশরাফুল হামিদ সাফওয়ান
  • ইবনুল কায়িম সাফওয়ান
  • সাফওয়ানুল করিম
  • সফওয়ান ইবনে উমাইয়া
  • আশরাফুল ইসলাম সাফওয়ান
  • সাফওয়ান ইবনে কামাল
  • খালিদ সাফওয়ান
  • তাইফ হাসান সাফওয়ান
  • তামান্না সাফওয়ান
  • সাফওয়ান ইসলাম সাভা
  • সফওয়ান আল আসাল
  • মোহাম্মদ সাফওয়ান
  • রকিবুল হক সাফওয়ান
  • সাফওয়ান হোসেন 
  • সাইফুল করিম সাফওয়ান
  • সফওয়ান আহমেদ 
  • সাফওয়ান আব্দুল্লাহ
  • সফওয়ান আহমেদ ফরহান
  • সফওয়ান ভূঁইয়া।

আব্দুল্লাহ আল সাফওয়ান নামের অর্থ কি?

আব্দুল্লাহ নামের অর্থ হলো: আল্লাহর দাস বা আল্লাহর বান্দা।

অন্যদিকে, সাফওয়ান নামের অর্থ হলো- বিশুদ্ধ, উজ্জল, পরিষ্কার, শিলা ইত্যাদি।

অর্থাৎ, আব্দুল্লাহ আল সাফওয়ান নামের অর্থ হয়: বিশুদ্ধ আল্লাহর বান্দা।

সাফওয়ান সাদিক নামের অর্থ কি?

সাফওয়ান নামের অর্থ হলো- বিশুদ্ধ, উজ্জল, পরিষ্কার, শিলা ইত্যাদি।

আর, সাদিক নামের অর্থ হলো- সত্যবাদী।

অর্থাৎ, সাফওয়ান সাদিক নামের অর্থ হয়- বিশুদ্ধ সত্যবাদী।

শেষকথা

উপরোক্ত আলোচনা থেকে সাফওয়ান নামের অর্থ কি? এই নামটির বৈশিষ্ট্য বানান ও গুণাবলী সম্পর্কে জানতে পারলাম। আপনার শিশুর নাম বাছাইয়ার ক্ষেত্রে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য আর্টিকেলগুলো করতে পারেন।

About Juyel Ahmed Liton

সুপ্রিয় “প্রোবাংলা” কমিউনিটি, ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ ছিলো এবং হয়তো সেই আকর্ষণটা অন্য দশ জনের থেকে একটু বেশি। ওয়েবসাইট, টাইপিং, আর্টিকেল লেখাসহ টেকনোলজি সবই আমার প্রিয়। জীবনে টেকনোলজি আমাকে যতটা ইম্প্রেস করেছে ততোটা অন্যকিছু কখনো করতে পারেনি। আর এই প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ থেকেই লেখালেখির শুরু.....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *