হোস্টিং কি? হোস্টিং কত প্রকার

হোস্টিং কি? হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি

প্রিয় ভিজিটর, হোস্টিং কি? হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি এ সম্পর্কে লেখাটি পড়ুন এবং জানুন। আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট অথবা ব্লগ তৈরির কথা চিন্তা করে থাকেন, তাহলে হোস্টিং কি এই ব্যাপারে সাধারণ জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরী। যার কারণ হচ্ছে পৃথিবীতে সকল মানুষেরই থাকার জন্য কোন না কোন জায়গা প্রয়োজন হয়। ঠিক একই ভাবে ইন্টারনেট জগতেও ওয়েবসাইট রাখার জন্য প্রয়োজন জায়গার আর সেই জায়গাটার নামই হচ্ছে হোস্টিং।

এজন্য আপনি ব্লগ বা ওয়েবসাইট ওপেন করার পূর্বে খেয়াল রাখতে হবে এটি কোথায় রাখবেন। আর এরকমই কেনা জায়গাটির নামই হল হোস্টিং (Hosting)

বর্তমান সময়ে একটি ওয়েবসাইট থাকাটা অনেক বড় বিষয়। আর এই ওয়েবসাইট মেইনটেন্স করাও সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। এর জন্য অনেক জ্ঞান থাকা জরুরী।

সফল ভাবে একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে আপনার দুটি বিষয়ের উপর নজর রাখতেই হবে- Domain ও Hosting । এ দুটি জিনিস ছাড়া কখনও ওয়েবসাইট তৈরি হতে পারে না।

হোস্টিং কি? (What is hosting)

লেখার শুরুতে বলছি হোস্টিং হচ্ছে এমন একটি সার্ভিস যেটির মাধ্যমে যেকোনো ওয়েবসাইট অথবা ব্লগ ইন্টারনেট জগতে চালু করা যায়। আমরা যখন কোন হোস্টিং প্রোভাইডার হতে হোস্টিং ক্রয় করি, তখন অনলাইনে ওয়েব সার্ভার এ আমার জন্য কিছু জায়গা বরাদ্ধ দেওয়া হয়।

আর এই ওয়েব সার্ভার এমন একটি কম্পিউটার যেটিতে সর্বদা নেট কানেকশন থাকে। এ সার্ভার ক্রয় করা জায়গাতে আমরা যখন আমাদের ওয়েবসাইট বা ব্লগ রাখি, তাছাড়া অডিও, ভিডিও, ফাইল ইমেজ লেখা পাবলিশ করি তখন সেগুলো এই সার্ভারে জমা হতে থাকে।

ওয়েব সার্ভার সর্বদা ইন্টারনেটের সঙ্গে কানেক্ট করা থাকে, যার ধরুন ওয়েবসাইট বা ব্লগ মোবাইল অথবা কম্পিউটার দিয়ে access করতে পারি। তবে, এর জন্য আমাদের একটি ডোমেইন নাম ক্রয় করতে হয়। তারপর এই ডোমেইনটিকে আমাদের ক্রয়কৃত সার্ভারের সাথে কানেক্ট করতে হয়।

হোস্টিং কি

ডোমেইন কি? ব্যবহার ও প্রকারভেদ

আপনার ওয়েব সার্ভার বা hosting এর সাথে ডোমেইন নাম কানেক্ট করার ফলে যে কেউ ইন্টারনেট কানেক্ট করে মোবাইল অথবা কম্পিউটার দিয়ে আপনার ওয়েব সার্ভারে বিদ্যমান অডিও, ভিডিও, ছবি বা লেখা গুলো দেখতে পারে যে মাধ্যমে তারই নাম হচ্ছে ওয়েবসাইট অথবা ব্লগ।

আশা করি বুঝতে বাকী নেই যে, হোস্টিং কাকে বলে? হোস্টিং হচ্ছে অনলাইনে থাকা এমন একটি জায়গা আপনার অর্থে ক্রয় কৃত অনলাইন জায়গার নাম যাতে নিজের ওয়েবসাইট ইন্টারনেটে সতেজ রাখার জন্য ব্যবহার হয়।

হোস্টিং কত প্রকার?

হোস্টিং বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। যেগুলো বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে সেগুলো নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো-

  • শেয়ার হোস্টিং (share hosting)
  • ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং(V.P.S – virtual private server)
  • ডেডিকেটেড হোস্টিং (dedicated hosting)

নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক-

১. শেয়ার হোস্টিং কি? (What is share hosting)

যে হোস্টিং এ অনেক গুলো ওয়েবসাইট রাখা হয়ে থাকে সেটিকে শেয়ার হোস্টিং বলা হয়। উদাহরণ- আপনার একটি ঘর আছে যাতে পরিবারের সকল সদস্য ভাগাভাগি করে থাকছেন।

এখানে আপনার ঘরটি হলো একটি ওয়েব সার্ভার এবং আপনি ও আপনার ফ্যামিলি হলো যারা ভাগ করে থাকছেন তারা হলো পৃথক পৃথক ওয়েবসাইট।

এতে আপনার ফায়দা হচ্ছে- আপনার ঘর ভাড়া ফ্যামিলি সবাই থাকার পরও কম খরচে থাকতে পারছেন। একই ভাবে শেয়ার হোস্টিংও অনেক গুলো ওয়েবসাইট রাখা হয় তাই এর খরচও কম। শেয়ার হোস্টিং অনেক টাকায় ক্রয় করা যায়। এটি নতুন ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ভালো একটি মাধ্যম।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা হোস্টিং কোম্পানি

২. ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং কি?

ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং গুলো শেয়ার হোস্টিং এর তুলনায় অনেক গুণ ভালো। সত্যি কথা হলো এই হোস্টিং আমরা তখনই ব্যবহার করি যখন আমাদের ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়তে থাকে। এক কথায় ওয়েবসাইট পপুলার হওয়ার পর এটি ব্যবহার করা ভালো। নতুন অবস্থায় এটি ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন নেই।

উদাহরণ- মনে করুন আপনার একটি বিল্ডিং রয়েছে যার কয়েকটি কামরা আছে। প্রত্যেকটি কামরায় একজন করে ফ্যামিলি মেম্বার থাকবেন। ঠিক একই ভাবে একটি একটি পৃথক সার্ভারে থাকবে এতে আপনার ওয়েবসাইটের স্পীড ভালো থাকবে। ভিপিএস সার্ভার অনেক নিরাপদ থাকে। শেয়ার হোস্টিং এর চাইতে অনেক গুণ ভিজিটর্স জায়গা করতে পারে। এর মূল্যও বেশি প্রায় বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১০০০ টাকা হতে ১৫০০ টাকা মাস শেষে গুণতে হয়।

৩. ডেডিকেটেড হোস্টিং কি?

ডেডিকেটেড হোস্টিং অন্য হোস্টিং এর তুলনায় ভিন্নতা রয়েছে। এর কারণ শেয়ার হোস্টিং আপনি একসাথে অনেকগুলো ওয়েবসাইট রাখবেন আর ভিপিএস সার্ভার একটি ভাগ দিতে হবে। আর ডেডিকেটেড হচ্ছে পুরো বিল্ডিং টাই আপনার নামে দেওয়া হলো অর্থাৎ পুরো বিল্ডিংটাই আপনি কিনে নিলেন।

এতে আর কারো ভাগ থাকলো না। যেমননি নিরাপত্তার দিকেও সেরা তেমনি ওয়েবসাইটের স্পীড। এতে আপনি প্রচুর পরিমাণের ট্রাফিক জেনারেট করতে পারবেন তবে দাম অনেক বেশি। এটি প্রায় প্রতিমাসে ৬০০০ টাকার মত পরিশোধ করতে হবে।

হোস্টিং কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়

কোন হোস্টিং পরিষেবা কেনার আগে বেশ কিছু বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রাখতে হয়। আপনি যদি আপনার অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি হোস্টিং সার্ভারের সার্ভিস ক্রয় করতে চান, তাহলে উন্নত বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করতে হবে:

  1. আপনার ব্যবহারিক ভিত্তি ও প্রয়োজনীয়তা অনুসারে কোন ধরনের হোস্টিং প্রয়োজন তার পূর্বেই নির্ধারণ করে রাখুন। যেমন: শেয়ার্ড, ভিপিএস, ডেডিকেটেড বা ক্লাউড হোস্টিং। এ সকল হোস্টিং গুলোর প্রতিটি সংস্থান, নিয়ন্ত্রণ এবং মাপযোগ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।
  2. হোস্টিং সার্ভারের CPU, RAM, স্টোরেজ ক্ষমতা এবং ব্যান্ডউইথের পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করুন। নিশ্চিত করতে হবে যে, এই সার্ভিসগুলো আপনার প্রত্যাশিত চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
  3. হোস্টিংয়ের আপ-টাইম ও পারফরম্যান্স অনুধাবন করুন। প্রয়োজনে আপনি যেই কোম্পানির হোস্টিং সার্ভিস ক্রয় করছেন, সেখানে কাস্টমার রিভিউ দেখে নিন। এছাড়াও ঘন ঘন ডাউনটাইমের ঝুঁকি থাকবে না এবং শক্তিশালী আপটাইম গ্যারান্টির ট্র্যাক রেকর্ড দেখে নিন।
  4. ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য SSL সার্টিফিকেট, শক্তিশালী ফায়ারওয়াল, নিয়মিত ব্যাকআপ এবং DDoS সুরক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। 
  5. ভবিষ্যতে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বৃদ্ধি পেলে যেন সহজেই হোস্টিংয়ের পরিধি সম্প্রসারণ করা যায়, তা নিশ্চিত করুন।
  6. হোস্টিং প্রোপাইডারদের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস কেমন, তা জেনে নিন। বেশ কিছু হোস্টিং প্রোভাইডার রয়েছে যারা সার্ভিস বিক্রয় করার পর কাস্টমার সমস্যায় পড়লে লাইভ সার্ভিস দেয় না।

উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখলেই উন্নত মানের ও বিশ্বস্ত হোস্টিং সার্ভিস ক্রয় করতে পারবেন।

শেষ কথা-
তাহালে, বন্ধুরা আজকে শিখলাম হোস্টিং কি এবং হোস্টিং কত প্রকার বিষয় সম্পর্কে। আমাদেরকে উৎসাহ আর উদ্দীপনা দিয়ে সাথে থাকুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top