নতুন ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করলে কিংবা সংশোধনের পর আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে, জেনে নিন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম।
বর্তমানে বাংলাদেশের এনআইডি কার্ড সম্পর্কিত সেবাগুলোকে অনলাইন ভিত্তিক করা হয়েছে। ব্যাংক একাউন্ট খোলা, সম্পত্তি ক্রয় বিক্রয়, সিম উত্তোলন, পাসপোর্ট তৈরি, ভোটার হওয়া ইত্যাদি নানা প্রয়োজনে ভোটার আইডি কার্ড লাগে। তবে ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করার পর তা হাতে পেতে অনেক সময় লাগে।
আবেদনের ৭-১৫ দিনের মধ্যে এনআইডি কার্ডের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে তা নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে আপলোড করা হয়। NIDW ওয়েবসাইট থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। বিস্তারিত প্রক্রিয়াটি নিয়েই আজকের আলোচনা।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে NID Card ডাউনলোড করতে পারবেন। আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে-
- জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/ফরম নম্বর/ মোবাইল মেসেজে আসা এনআইডি নম্বর।
- জন্মতারিখ।
- বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা তথ্য।
- একটি সচল মোবাইল নাম্বার।
- NID Wallet ব্যবহার করার জন্য স্মার্টফোন।
এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার বিস্তারিত প্রক্রিয়াটি নিচে ছবিসহ ধাপে ধাপে দেখানো হলো:
ধাপ ১: NIDW ওয়েবসাইটে ভিজিট
প্রথমেই আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে NID Download – এই লিংকে ভিজিট করুন। আপনার সামনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট ওপেন হবে। এখান থেকে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য ‘রেজিস্টার করুন’ অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ ২: জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম তারিখ প্রদান
একাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য প্রথম অংশে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অথবা ভোটার স্লিপ নম্বরটি লিখুন। তারপর পর্যায়ক্রমে জন্ম তারিখের দিন, মাস ও বছর পূরন করুন। নিচের ক্যাপচায় থাকা কোডটি সঠিকভাবে লিখুন এবং সাবমিট এ ক্লিক করুন।
ধাপ ৩: বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানার তথ্য
আপনার আইডি কার্ডের আবেদনের সময় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আপনার বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম নির্বাচন করুন। তারপর একইভাবে আপনার স্থায়ী ঠিকানার তথ্য পূরণ করুন। সকল তথ্য পূরন করা হলে পরবর্তী – লেখাতে ক্লিক করুন।
ধাপ ৪: মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করুন
বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা পূরন করার পর মোবাইল ভেরিফাই করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ভোটার আইডি কার্ড আবেদনের সময় ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি ডিফল্ট ভাবে দেওয়া থাকবে।
আপনি চাইলে এখান থেকে মোবাইল পরিবর্তন- এ ক্লিক করে আপনার হাতে থাকা সিম নাম্বার টি দিতে পারবেন। তারপর ‘বার্তা পাঠান’ বাটনে ক্লিক করুন।
আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বারে একটি ওটিপি কোড আসবে। যাচাইকরন কোডের ঘরে সেই OTP কোডটি সঠিকভাবে লিখে বহাল বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৫: ফেইস ভেরিফিকেশন করুন
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য নিরাপত্তার জন্য নির্বাচন কমিশন ফেইস ভেরিফিকেশনকে বাধ্যতামূলক করেছে। এই ধাপে ফেইস ভেরিফিকেশনের জন্য একটি QR কোড সম্বলিত পেজ দেখতে পাবেন।
আপনার মোবাইলে পূর্বে ডাউনলোড করে রাখা NID Wallet অ্যাপস এ প্রবেশ করুন। তারপর স্ক্রিনে থাকা QR কোডটি স্ক্যান করুন। এবার Start Face Scan অপশনে ক্লিক করুন। মোবাইলের সেলফি ক্যামেরার সামনে আপনার চেহারা সঠিকভাবে তুলে ধরুন।
সামনের দিকে, ডানে ও বামে তাকালেই ফেইস ভেরিফাই হয়ে যাবে। তারপর ওয়েবপেজে যান।
ধাপ ৬: পাসওয়ার্ড সেট করুন
এই ধাপে, আপনার এনআইডি কার্ডের ব্যক্তিগত একাউন্টের পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে। আপনি চাইলে ধাপটি এড়িয়ে যেতে পারেন। তবে একাউন্ট নিরাপত্তার জন্য এবং পরবর্তীতে সহজেই একাউন্টে লগইন করার জন্য একটি পাসওয়ার্ড সেট করে নিন।
পাসওয়ার্ড সেট করে থাকলে পরবর্তীতে একাউন্ট রেজিস্টার মোবাইল ভেরিফাই ও ফেস ভেরিফাই করতে হয় না।
ধাপ ৭: ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
পাসওয়ার্ড সেট সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আপনার ব্যক্তিগত প্রোফাইলে নিয়ে যাওয়া হবে। এখানে থেকে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন, রিইস্যু, একাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন ও এনআইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
এখান থেকে ‘ডাউনলোড’ অপশনে ক্লিক করলেই আপনার ভোটার আইডি কার্ডের পিডিএফ কপি ডাউনলোড হয়ে যাবে। ডাউনলোড করার পর তা প্রিন্ট করে ও ল্যামিনেশন করে যেকোনো কার্যক্রমের ব্যবহার করতে পারবেন।
উপরোক্ত নিয়মে খুব সহজেই ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে শুধু অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত মেইন কপি পেতে সরকারি হালনাগাদের অপেক্ষা করুন।
ভোটার আইডি কার্ড চেক
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করে থাকলে কিংবা ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যু করলে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার প্রয়োজন হয়। খুব সহজেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/নতুন ভোটার হলে ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন।
নতুন ভোটার আবেদন করলে আইডি কার্ড চেক করার জন্য NIDW ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। এবার রেজিস্টার অপশনে যান। আপনার ভোটার ফরম নম্বর ও জন্ম তারিখ লিখুন। তারপর ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়মে আইডি কার্ড অনলাইনে থাকলে পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন। অন্যথায়, তথ্য ভুল মেসেজ দেখতে পাবেন।
এছাড়াও নতুন আইডি কার্ডের ক্ষেত্রে ভোটার ফরম নম্বর অপশনে NIDFN লিখে স্পেস ছাড়া আপনার ভোটার ফরম নম্বর লিখুন। তারপর জন্ম তারিখ ও ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট করুন। পরবর্তী ধাপে যেতে পারলে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করলে, আইডি কার্ড সম্পূর্ণ প্রসেসিং হতে ৭-১৫ দিন সময় লাগে। সরকারিভাবে আইডি কার্ড হালনাগাদ করে হাতে পেতে কয়েক মাস সময় লাগে।
তবে ৭-১৫ দিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সেই আইডি কার্ডের তথ্য যুক্ত করা হয়। তাই ১৫ দিনের মধ্যেই অনলাইনে আইডি কার্ড চেক করে ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
তাৎক্ষণিক নানা প্রয়োজনে আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে হয়। এসময় NIDW ওয়েবসাইটে রেজিস্টার করে ফর্ম নাম্বার/এনআইডি নাম্বার, জন্ম তারিখ দিয়ে, মোবাইল নাম্বার ও ফেইস ভেরিফাই করে ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
ডাউনলোড করার পর অনলাইন কপি প্রিন্ট ও ল্যামিনেশন করে মূল কপির মতোই ব্যবহার করতে পারবেন।
পুরাতন আইডি কার্ড ডাউনলোড
অনলাইন থেকে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য, আপনার নিকটস্থ থানায় জিডি করে থানার নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর সহ জিডি কপি সংগ্রহ করুন। তারপর, services.nidw.gov.bd- এই লিংকে ভিজিট করে রেজিস্টার করুন। ড্যাশবোর্ড থেকে রিইস্যু অপশনে গিয়ে রিইস্যুর কারন উল্লেখ করে, ২৩০ টাকা NID Service ফি দিয়ে জিডি কপি আপলোড করে রিইস্যুর জন্য আবেদন করুন। আবেদন অনুমোদিত হলে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
Duplicate Regular অপশন থেকে ২৩০ টাকা ফি দিয়ে আবেদন করলে সময় বেশি লাগে। Duplicate Emergency দিলে সময় কম লাগে। অনলাইনে রিইস্যু আবেদন করার পর তা ডাউনলোড করতে দিন অপেক্ষা করতে হবে। নির্ধারিত কার্যদিবসের মধ্যে আপনার মোবাইল নাম্বারে SMS এর মাধ্যমে আবেদন অনুমোদন হয়েছে কিনা জানানো হবে। SMS পাওয়ার পর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আপনার একাউন্টে লগইন করুন। তারপর ড্যাশবোর্ড থেকে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করলে আপনার NID Card এর PDF কপি ডাউনলোড হয়ে যাবে।
Nid card download
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য NIDW ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। রেজিস্টার অপশনে ক্লিক করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/ফর্ম নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট করুন।
বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানায় তথ্য দিয়ে আপনার মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করুন। এবার মোবাইলে NID Wallet এপ্স এর মাধ্যমে ফেস ভেরিফাই করে পাসওয়ার্ড সেট করুন। এবার এনআইডি কার্ডের পার্সোনাল ড্যাশবোর্ড ওপেন হলে ডাউনলোড অপশন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
Nid card download bd
বাংলাদেশের এনআইডি কার্ডের সকল সেবা এখন অনলাইন ভিত্তিক করা হয়েছে। দেশের নাগরিকদের সুবিধার জন্য NIDW ওয়েবসাইট থেকে NID Card Download সহ সকল সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
উপরোক্ত ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়মে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক তার এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবে।
Online nid card download
To download your NID card online, first of all, visit the NIDW website. Then, click on the register option and submit your information by filling-
- National ID number/ form number,
- Date of birth,
- Captcha.
In the next steps select your present and permanent address, verify your mobile number and complete face verification by NID Wallet mobile application. Then set a password or skip the step. At last, when the personal dashboard of your NID profile is opened, you can download your NID card online copy.
Smart nid card download
বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ স্মার্ট এনআইডি কার্ড ব্যবস্থা চালু রয়েছে। নতুন আবেদনকারীরা জাতীয় পরিচয় পত্র হিসেবে এখন স্মার্ট কার্ড পাবেন। তবে অনলাইন থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করার কোন ব্যবস্থা নেই।
উপরোক্ত নিয়মে আপনার স্মার্ট আইডি কার্ড ১০ সংখ্যার নাম্বার সম্বলিত আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। তবে স্মার্ট কার্ডের জন্য সরকারি হালনাগাদের অপেক্ষা করুন।
শেষ কথা
নানা কাজে তাৎক্ষণিকভাবে আইডি কার্ড প্রয়োজন হয়। তবে সরকারি ভাবে আইডি কার্ড পেতে কয়েক মাস থেকে বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তাই উপরোক্ত ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়মে আপনার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।