Probangla প্রতিনিয়ত আপনাদের জন্য নতুন নতুন গেজেটের রিভিউ নিয়ে আসে। আজকেও সেই ধারাবাহিকতার ব্যতিক্রম হয়নি। হাজার হাজার গেজেটের রিভিউ দেখার পর আপনাদের জন্য কিছু গেজেট বাছাই করি। এরপর এগুলোর মধ্যে যেগুলো আপনাদের কাজে লাগবে এমন কিছু নির্বাচিত গেজেট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকে।
আজ এমনই তিনটি গেজেট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। যেগুলো আপনাদের জন্য অনেক উপকারী প্রমাণিত হবে। হয়তো এর আগে এগুলো সম্বন্ধে আপনি জানতেনও না। আসুন দেখে নেওয়া যাক তিনটি গেজেট।
১. Yubikey Bio
আমরা প্রত্যেকে কোনো না কোনোভাবে প্রযুক্তির সাথে যুক্ত। কেউ স্মার্ট ফোনের দ্বারা কেউ বা ল্যাপটপের দ্বারা। প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত হতে গেলে একটি ব্যাপার সব সময় খেয়াল রাখতে হয়। সে ব্যাপারটি হচ্ছে আপনার ডিভাইসের তথ্য যেন কারো হাতে না যায়। ডিভাইসের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুবই সচেতন থাকি। তবুও আমাদের ল্যাপটপ থেকে তথ্য চুরি হয়ে যায়। অনেক সময় হ্যাকারগণ শক্তিশালী পাসওয়ার্ডও হ্যাক করে ফেলে। তাই আমাদের এমন এক নিরাপত্তা বেষ্টনী দরকার যা কেউ হ্যাক করতে পারবে না।
আমরা সকলেই জানি, আমাদের আঙুলের ছাপ একদম মৌলিক। একটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপের সাথে বিশ্বের কোনো মানুষের আঙ্গুলের ছাপ মিলবে না। এটাকে বিজ্ঞানীরা খুবই শক্তিশালী সিকিউরিটি সিস্টেমে পরিণত করেছে। এটাকে বলা হয় বায়োমেট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম। বায়োমেট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমকে ভেদ করা অসম্ভব।
Yubikey Bio এমন একটি ডিভাইস। যেটা দেখতে পেনড্রাইভের মতো। এটায় ফিঙ্গার প্রিন্ট রিসিভ করার সিস্টেম রয়েছে। এটাকে আপনার ল্যাপটপে ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে সংযোগ দিতে হবে। এরপর এর একটি নির্দিষ্ট অ্যাপ আছে এবং সেখানে গিয়ে আপনি আপনার পছন্দ মতো সেটিং সেট করে নেবেন।
সেট করার পর কেউ আপনার ল্যাপটপ আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছাড়া অন করতে পারবে না। আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছাড়া কোন ফাইল ট্রান্সফার হবে না। মোটকথা আপনি ব্যতীত কেউ আপনার ল্যাপটপ থেকে ডাটা স্থানান্তর করতে পারবে না।
২. Joyroom Smart watch
স্মার্ট হাতঘড়ির কথা যদি বলেন তাহলে বাজারে হরেক রকমের স্মার্ট হাতঘড়ি আছে। ব্র্যান্ডের আছে, নন ব্র্যান্ডের আছে। এমনকি ৩৫০-৫০০ টাকা দামেরও স্মার্ট ঘড়ি আছে। কিন্তু সব স্মার্ট ঘড়ি কি আসলেই স্মার্ট?
ভালো ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচের মধ্যে আছে শাওমি, samsung, হুয়াই, লেনোভা, এ্যপল। এগুলো অনেক ভালো ব্র্যান্ডের এবং ভালো মানের হলেও, দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে। এছাড়া স্মার্ট ওয়াচ সবার প্রয়োজনও নেই। যারা ফিটনেস নিয়ে ভাবেন, শরীর চর্চা করেন তাদের জন্য বিশেষ ধরণের স্মার্টওয়াচ প্রয়োজন পড়ে।
রক্তচাপ, হার্টবিট, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ এগুলো তো আজকাল স্মার্টওয়াচের দ্বারাই জানা যায়। এগুলোর কথা বিবেচনা করেই এই Joyroom Smart watch বাজারে এসেছে।
এর রয়েছে চিত্ত আকর্ষণীয় ডিজাইন। হাতে পরলে মনে হবে আপনি আসলেই স্মার্ট। ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচের মতো এর রয়েছে অসংখ্য ফিচার। তবে এটার দাম কম। দাম কম হওয়া সত্বেও এটা পানি নিরোধক।
আপনি ব্লাড প্রেসার, ফুট স্টেপ, হার্টবিট এটা দ্বারা মাপতে পারবেন। কেননা এই ঘড়িতে আছে শক্তিশালী সেন্সর। রয়েছে ১.৩ ইঞ্চি HD ডিসপ্লে। আপনার ফোনের সাথে এটাকে কানেক্ট করে রাখতে পারবেন। email, whatsapp, মেসেঞ্জার এটার মাধ্যমে চেক করতে পারবেন। কল রিসিভ করার সুবিধা আছে।
এটাকে আপনি ওয়ারলেস চার্জারের দ্বারা চার্জ করতে পারবেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে এটা এক চার্জে এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে।
আরো পড়ুন: চমৎকার তিনটি গ্যাজেট
৩. Nex Dock 2
প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলো এখন অনেক ছোট হয়ে আসছে। মোবাইল আবিষ্কারের প্রাক্কালের মোবাইল গুলো ছিল অনেক বড়। ওজনও ছিল অনেক। এখন বৃদ্ধাঙ্গুলের চেয়েও ছোট মোবাইল বাজারে এসেছে। বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরে চাচ্ছেন ল্যাপটপ ও মোবাইলের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনতে। এর ফলশ্রুতিতে তৈরি হয়েছে ট্যাবলেট। কিন্তু তবুও ল্যাপটপের জায়গা পরিপূর্ণভাবে দখল করতে পারেনি।
এছাড়া আর একটি বিষয় হচ্ছে, ল্যাপটপ অনেক প্রয়োজনীয় হওয়া সত্বেও সব জায়গায় ব্যবহার করা যায় না। এর মূল কারণ হচ্ছে ল্যাপটপের ব্যাটারি খুব অল্প সময় ব্যাকআপ দেয়। যদিও বড় বড় ল্যাপটপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বলে থাকে, তাদের ল্যাপটপ ৮-১০ ঘন্টা ব্যাকআপ দেয়। কিন্তু বাস্তবে সেই ল্যাপটপের ব্যাটারি সর্বোচ্চ পাঁচ ঘন্টা ব্যাকআপ দিতে পারে।
আমরা যখন বাহিরে কোথাও যাই তখন ল্যাপটপকে চার্জ করা নিয়ে মুশকিলে পড়ে যাই। এই সমস্যার সমাধানের জন্য বাজারে এসেছে Nex Dock 2
এটা ল্যাপটপের মত দেখতে হলেও এর মধ্যে কোনো র্যাম, প্রসেসর বা মাদারবোর্ড নেই। এটার মধ্যে আছে শুধু স্ক্রিন। কয়েকটা ইউএসবি পোর্ট। কিবোর্ড ও মাউস। এছাড়া এর নিচের অংশ জুড়ে আছে বড় একটি ব্যাটারি। ক্যাবল এর মাধ্যমে আপনি আপনার মোবাইলের সাথে এটাকে কানেক্ট করবেন।
আপনার মোবাইলের RAM, প্রসেসর ও মাদারবোর্ড ব্যবহার করে এটা চলবে। কম্পিউটারে যেমন মনিটর থাকে এটাও মনিটর ও কিবোর্ডের মতো কাজ করবে। আপনার মোবাইলকে বানিয়ে ফেলবে কম্পিউটার।
এটার ব্যাকআপ অনেক বেশি। কেননা এটার ব্যাটারিকে কোনো RAM, মাদারবোর্ড বা প্রসেসরকে সচল করতে হয় না। তাই এটা সবচেয়ে বেশি ব্যাকআপ দেয়।