Skin Care Tips : সৌন্দর্যের প্রতি যত্নশীল কমবেশী আমরা সবাই। কথায় রয়েছে, “আগে দর্শনধারী তারপর গুণ বিচারী”। তাই নিজেকে ব্যতিক্রমভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টায় মগ্ন । এই চেষ্টার হতে আজকে সর্বদা ত্বকের যত্ন নিয়ে কিছু লিখলাম।
আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অথবা বড় অঙ্গটিই হচ্ছে ত্বক। কিন্তু আমরা কি এই ত্বকের যত্ন সঠিকভাবে নিতে পারছি। সত্য কথা হলো না! তবে কিভাবে নিবেন? চলুন সর্বদা ত্বকের যত্ন নিতে যে যে টিপসগুলো জানা প্রয়োজন সে গুলো আজকে নেয়া যাক।
সর্বদা ত্বকের যত্ন নিতে করনীয়
১. ত্বক পরিষ্কার রাখার মাধ্যমে ত্বক ভাল, সুন্দর আর সুস্থ রাখা যায়। নিয়মিত মুখ ধুতে হবে। সর্বদা দিনে ৩/৪ বার ফেইসওয়াশ দ্বারা মুখ ধৌত করাটা একটি ভালো অভ্যাস। এছাড়াও মাঝে-মধ্যে ঠান্ডা পানি দিয়ে ঝাপটা দিলে আরো ভালো। যারা তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী তারা একটু ক্ষারযুক্ত সোপ বা সাবান ব্যবহার করলে উপকার হবে।
২. এতোক্ষণ তো ত্বক পরিষ্কার করলেন। এবার মুখ ধোয়া শেষে টোনার লাগাতে পারেন। তারপর পছন্দমত মুখে ক্রিম লাগিয়ে নিবেন। বাহিরে বের হবার ১৫-২০মিনিট পূর্বে ভালো সানব্লক ব্যবহার করাটা উত্তম। তাছাড়া সপ্তাহে ১/২ দিন চন্দন মুখে লাগালে ত্বকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
৩. অন্ততপক্ষে মাসে ১/২ বার ফেসিয়াল করতে পারলে উপকার পাবেন। এতে আপনার “এক ঢিলে দুই শিকার” তাতে মুখের ম্যাসেজও হয়ে যায়। এছাড়াও রক্ত সঞ্চালন অনেকাংশে বেড়ে যায়। আরও ভালো হয়, কোন পার্লারে গিয়ে এ কাজটি করতে পারলে।
তবে তা না পারলে মন খারাপের কিছু নেই। ঘরে বসে নিজে নিজে করে নিতে পারেন ফেসিয়াল। ঘরে বসে ফেসিয়াল করতে যা লাগবে তা হলো ২৫০-৩০০/- টাকার ১টি ফেসিয়াল কীট! তাছাড়া এ কাজটি করতে সময় একদম কম প্রয়োজন হয়! মাত্র ২০-২৫ মিনিট সময় লাগে। এছাড়াও এক ফেসিয়াল দিয়ে আপনি বহুবার ফেসিয়াল করতে পারবেন। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর বিভিন্ন ফেসিয়াল কীট পাবেন। তবে আমার ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ বাই ন্যাচার, গোল্ড ফেসিয়াল কীট। তাছাড়াও ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম, জেল এবং প্যাক ৩টি পৃথক কোটায়।
সর্বপ্রথম ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম দ্বারা ১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। তাতে মুখের নোংরা চামড়াগুলো দূর হবে। তারপর জেল দিয়ে ১০-১৫ মিনিট ম্যাসাজ করে উঠাতে হবে ভেজা তুলা দিয়ে। তারপর প্যাক দ্বারা ২/৩ মিনিট ম্যাসাজ করে ১০ মিনিটের জন্য এভাবে রেখে দিতে হবে। তারপর ভেজা তুলার মাধ্যমে উঠিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
৪. রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বকে, টমেটো কেটে মুখ ,হাত আর গলায় ঘষলে পেোড়া ভাব চলে যায়। তবে এ কাজটি ধৈর্য নিয়ে করতে হবে কারণ এটি খুব স্লো প্রসেস। এছাড়া বেশী সানবার্ন হলে , ওষুধের দোকান থেকে সানবার্নের জন্য ক্রিম নিয়ে, সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
আরো পড়ুন: গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা- প্রেগন্যান্সি খাদ্য তালিকা
শরীরের সুস্থতায় প্রয়োজনীয় টিপস
- ১) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অতিব জরুরী। এক্ষেত্রে নিয়ম মেনে খেতে হবে এটা বলব না যেমন প্রতিদিন ৮গ্লাস। আপনার যখনি পানির পিপাসা হবে তখন পানি পান করবেন।
- ২) ধুমপান অথবা মাদকদ্রব্য একদম করা যাবে না।
- ৩) প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেতে হবে।
- ৪) সময়মত ঘুমাতে হবে অর্থ্যাৎ সকাল সকাল ঘুমাতে হবে।
- ৫) ত্বকের জন্য উপকারী রাতে এক গ্লাস দুধ খাওয়া। তাতে ত্বক মমৃণ এবং মোলায়েম হয়।
- ৬) নিয়মিত গোসল করা।
- ৭) যতটা সম্ভব চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।
- ৮) নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- ৯) মুখের ত্বকে হাত দিবেন না বা নখ লাগাবেন না।
- ১০) মুখে অযথা ইচ্ছামত প্যাক বা ভেষজ উপাদান বেশী না দেওয়াই শ্রেয়।
- ১১) মুখে ব্রণ হলে বা অন্য কিছু হলে নখ লাগানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
- ১২) ত্বক সর্বদা পরিষ্কার রাখবেন।
অনেকেই চায় ত্বক ফর্সা করতে। সত্তি কথা হলো ত্বক ফর্সাকারী কোন ক্রিম নেই। বাজারে যেগুলো পাওয়া যায়, তাতে প্রচুর পরিমাণে স্টেরয়েড থাকে । ক্রিম ব্যবহার করা বন্ধ করে দিলে একটা সময় দেখা যাবে ত্বক কালো দেখাচ্ছে। একটা কথা মনে রাখা উচিত রং নয় বরং সুস্থ ও দাগহীন ত্বকই বেশী আকর্ষণীয়। আর সৌন্দর্যের সবচেয়ে বড় বিষয় হলো প্রেজেন্টেশন। নিজেকে স্মার্ট আর রুচিশীল করে এমন প্রেজেন্টেশন-ই হলো সৌন্দর্য। তাই কৃত্রিম ভাবে চিন্তা না করে সর্বদা ত্বকের যত্ন নিয়ে আপনার ত্বক রাখুন দাগহীন, পরিষ্কার, সুস্থ এবং সর্বপরি সুন্দর!