বর্তমানে ব্লগিং করে ইনকাম খুবই জনপ্রিয় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘরে বসে অনলাইন থেকে ইনকাম করার একটি নিশ্চিত ও তূলনামূলক সহজ উপায় হলো ব্লগিং। ব্লগিং করে কিভাবে উপার্জন করা যায়, এ বিষয়ে আমরা অসংখ্য ভিডিও ও আর্টিকেল প্রতিনিয়তই দেখে থাকি। তবে সেগুলো আমাদের জন্য কতটা কার্যকর, তা বুঝে উঠা কঠিন।
একটি ওয়েবসাইট তৈরি থেকে শুরু করে ইনকাম করা পর্যন্ত অনেকটা বিস্তর ধারাবাহিকতা অনুসরণ করতে হয়। অধিকাংশ ভিডিও বা লিখিত কন্টেন্ট গুলো থেকে আমরা ওয়েবসাইট মেইন্টেন্যান্স সম্পর্কে জানলেও, এই অতি প্রয়োজনীয় ধারাবাহিকতার বিষয়টি-ই জানতে পারিনা। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য, ধারাবাহিকতা অনুসারে একটি ওয়েবসাইটের যাত্রা শুরু করা থেকে ইনকাম করা পর্যন্ত নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
- ১। সর্বপ্রথম, শুধুমাত্র ওয়েবসাইটে ব্যবহারের জন্য একটি ইউনিক ইমেইল তৈরি করতে হবে।
- ২। এবার বিশ্বস্ত কোম্পানি থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করতে হবে। এক্ষেত্রে এমন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করুন, যেখানে ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি থেকেই আপনার ওয়েবসাইটের কিছু সেটিংস করে দিবেন।
- ৩। ওয়েবসাইটের জন্য সুন্দর একটি লোগো (Logo) তৈরি করতে হবে। এই লোগো আপনার ওয়েবসাইটের টপ লেফট কর্নারে (উপরের বাম দিকে) বা থিম অনুযায়ী ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট স্থান বসাতে হবে।
- ৪। এবার ওয়েবসাইটের বাধ্যতামূলক পেইজগুলো, যথা – About Us, Contact Us, Privacy Policy পেজ তৈরি করতে হবে। একইসাথে, Terms and Conditions, Comment Policy পেইজ তৈরি করতে পারেন।
- ৫। সকল সোস্যাল মিডিয়াতে ওয়েবসাইটের নামানুসারে প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। যেমন- Facebook Page, Instagram, Pinterest, Quora, Raddit, Twitter, Linkedin, Tumblr, Youtube ইত্যাদি। এতে আপনার সাইটের প্রচার ও প্রসার ঘটবে। তাছাড়া আপনার ওয়েবসাইটের প্রানশক্তি – ‘ভিজিটর’ বাড়াতেও এটি সহায়তা করবে।
- ৬। ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরি অপশন হতে আপনার কাংঙ্খিত ক্যাটাগরিগুলো তৈরি করতে হবে। আপনি যেই ক্যাটাগরি বা নিশ (Niche) নিয়ে কন্টেন্ট পাবলিশ করবেন, সে অনুযায়ী ক্যাটাগরি তৈরি করুন।
- ৭। ওয়েবসাইটের মেন্যুবার সেটিং করতে হবে।
- ৮। ওয়েবসাইটের সাইডবার সেটিং করতে হবে।
- ৯। আপনার সাইটের ফুটার সেকশন (Footer Section) কাস্টমাইজ করতে হবে।
- ১০। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নিয়মিত পোস্ট করতে হবে। পর্যাপ্ত ভিজিটর পেতে এবং এডসেন্স এপ্লাই করতে কমপক্ষে ৩০-৪০টি পোস্ট করে নিন। খেয়াল রাখবেন পোস্টগুলো যেন Google এর নীতিমালা মেনে লিখা হয়।
- ১১। নিয়মিত পোস্ট করার পাশাপাশি আপনার তৈরিকৃত সোস্যাল মিডিয়া গুলোতে পোস্ট শেয়ার করতে হবে।
- ১২। এবার, Google Analytics এর জন্য আবেদন করতে হবে।
- ১৩। Google Webmaster আবেদন করতে হবে এবং সাইটের সাইটম্যাপ সাবমিট করতে হবে।
- ১৪। ওয়েবসাইট টির জন্য Google News আবেদন করতে হবে।
- ১৫। One-signal Push Notification Plugins ইনস্টল করতে হবে।
- ১৬। ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে প্রোফাইল ব্যাকলিংক করতে হবে। অর্থাৎ আপনার সাইটের কন্টেন্ট ক্যাটাগরি রিলেটেড অন্যান্য ওয়েবসাইটে গিয়ে কমেন্ট করতে হবে এবং সেই কমেন্টে আপনার ওয়েবসাইটের লিংকসহ লিখতে হবে।
- ১৭। সাইটের সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে Google Adsense এর জন্য আবেদন করতে হবে।
- ১৮। ওয়েবসাইটে এডসেন্স অনুমোদন পাওয়ার পর Ads Setting করতে হবে।
- ১৯। তারপর, আপনার স্থায়ী ঠিকানায় এডসেন্স পিন ভেরিফিকেশন করতে হবে এবং গুগলের আর্নিং প্যানেলে (এডসেন্স একাউন্টে) আপনার ব্যাংক একাউন্ট যুক্ত করতে হবে।
- ২০। এবার আর্নিং বৃদ্ধি করতে এবং ওয়েবসাইটটি অধিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে নিয়মিত ভালো ও কোয়ালিটি সম্পন্ন কন্টেন্ট পাবলিশ করুন। মাঝে মাঝে সম্ভব হলে হাই অথোরিটি ডোমেইন থেকে ডু-ফলো (Do Follow) ব্যাকলিংক করতে হবে। এতে আপনার ওয়েবসাইট শক্তিশালী হবে এবং গুগলের কাছে বেশি গ্রহনযোগ্য হবে।
শেষকথা
উপরোক্ত ধাপগুলো অনুসরন করে একটি সফল ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। যার মাধ্যমে সফল হতে পারে আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার। শুধুমাত্র এডসেন্স থেকেই নয়, ইনকাম করতে পারবেন এফিলিয়েট মার্কেটিং করেও। আপনার ওয়েবসাইট প্রস্তুত করতে অনুসরণ করতে পারেন আমাদের ProBangla এর দেখানো উপরোক্ত ধারাবাহিকতা গুলো।