Happy New Year নিউ ইয়ার

হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২৩ | Happy New Year 2023

প্রথমে সবাইকে probangla-র পক্ষ থেকে আগত নববর্ষের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাই ‘Happy New Year’

নিউ ইয়ার অর্থাৎ নববর্ষ পালন নতুন কিছু নয়। সেই প্রাচীনকাল থেকেই এই উৎসব পালন হয়ে আসছে। প্রাচীন সভ্যতা মিশরেও নববর্ষ পালন হতো। ব্যাবিলনেও নববর্ষ পালন হতো বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে সেটা গ্রেগরিয়ান বা খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডার অনুসারে নয়। তখন ছিল তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার।

আজকাল পশ্চিমা বিশ্ব শুধু নয়, পুরো পৃথিবী জুড়ে হ্যাপি নিউ ইয়ার এর উৎসব হয়। ৩১শে ডিসেম্বর মধ্যরাতে আনন্দের ফোয়ারা বইতে থাকে। রাতের আকাশে আতশবাজিতে লেখা হয় Happy New Year সব দেশেই এই রাতে ব্যাপক ধুমধাম আনন্দ উৎসব শুরু হয়। তবে প্রতিটা দেশের অনুষ্ঠানাদিতে সামান্য কিছু পার্থক্য থাকে।

৩১শে ডিসেম্বরকে বলা হয় নিউ ইয়ার’স ইভ। তখন থেকেই শুরু করে বছরের প্রথম দিন ১ম জানুয়ারি অবদি নিউ ইয়ার উদযাপন করে। পশ্চাত্য দেশেগুলোতে এইদিন সবাই মেতে ওঠে ভোজন উৎসবে। আগত নিউ ইয়ারের সৌভাগ্য বরণ করে নেওয়ার জন্য এই ভোজ উৎসব করে থাকে তারা।

কিছু সংস্কৃতির মানুষজন আছে যারা শুকরকে উন্নতি ও অগ্রগতির প্রতীক মানেন। তাই নিউ ইয়ারের প্রথম দিনে অস্ট্রিয়া, কিউবা, পর্তুগাল, হাঙ্গেরিসহ আরো কয়েকটি দেশে নতুন বছরের প্রথম দিনে শুকরের মাংস ভক্ষণ করা হয়। এক বছর পূর্ণ করা উপলক্ষে নেদারল্যান্ড , মেক্সিকো ও গ্রিসে ভোজন উৎসবে তৈরি করা হয় বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত গেলাকৃতির কেক। সুইডেন ও নরওয়েতে তৈরি হয় রাইস পুডিং। যেটার ভেতরে একটি কাঠ বাদাম রেখে দেয়া হয়। তাদের ধারণা হলো পুডিংটি খেতে গিয়ে যেই ব্যক্তিটি বাদামটি পাবেন, তার নতুন বছর অনেক ভালো কাটবে।

আমাদের দেশে নিউ ইয়ার শহরাঞ্চলে পালন করা হয়। ধনী ছেলে-মেয়েরা এই দিন বিভিন্ন মদের দোকানে মদ্য পানের আসর জমায়। সুউচ্চ দালানের ছাদে তারা কাবাব-শারাবের মাহফিল আয়োজন করে। আতশবাজিতে ছেয়ে যায় গোটা আকাশ। পটকার বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে পথ-ঘাট; মানুষের বুক। Happy New Year ধনী ছেলে মেয়েদের জন্য বয়ে আনে আনন্দের জোয়ার। কিন্তু সবার জন্য এটা Happy হয় না।

কেননা বছরের প্রথম দিকে গরিবের সন্তানদেরকে স্কুলে ভর্তি করাতে হয়। নতুন করে বই খাতা কিনতে হয়, নতুন পোশাক বানাতে হয়। New Year মানে সকল কিছুই নতুন করে করতে হয়।

প্রতিটা নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষেরা আবারো নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তারা ভাবে, এই বছর তো হেলায়-ফেলায় কেটে গেল। কিন্তু আগামী বছর থেকে আরো বেশি পরিশ্রমী হতে হবে এবং খেয়ে, না খেয়ে আরো অর্থ সঞ্চয় করতে হবে। ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। কিন্তু তাদের এই নবস্বপ্ন সর্বদা নবস্বপ্নই থেকে যায়। এটা কখনো পূরণ হয় না। বরঞ্চ প্রতি বছর নবায়ন হয়।

গত বছর ইতালিতে একটি মহা প্রলয়কাণ্ড ঘটে গিয়েছিল। সেখানকার মানুষজন মাতাল হয়ে লক্ষ লক্ষ আতশবাজি ও পটকা ফোটায়। সেই শব্দে শহরের সকল পাখিগুলো ভয়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। কিছু পাখি ভয়ে মারা যায়। কিছু পাখি উড়তে গিয়ে দেয়ালে ধাক্কা লেগে মাথা ফেটে মারা যায়। মা পাখি যখন ভয়ে উড়াউড়ি করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে। ওদিকে পাখির বাসায় ছানাগুলো না খেয়ে ছটফটিয়ে মরে।

এটা যে শুধু ইটালিতে ঘটেছে এমনটা নয়। এর আগেও বহু স্থলে এমন হয়েছে এবং এখনো হবে। সেই সাথে বাড়বে বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ। আতশবাজির স্ফুলিঙ্গ অনেক মানুষের চোখে লেগে মারাত্মক ক্ষতি করেছে। মদ খেয়ে মানুষ মাতাল হয়ে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটিয়েছে।

আরো পড়ুন: ইংরেজি নববর্ষ ২০২৩ – Happy New Year 2023

অনেক মানুষ মনে করেন, নিউ ইয়ার হলো গরীবদেরকে হেয় করার জন্য ধনীদের এক পৈশাচিক উৎসব। এই কথা অবশ্য অনেকেই এখন স্বীকার করছে। সাম্রাজ্যবাদীদের পদলেহন করে আমরাও তাদের বিকৃত সংস্কৃতির অনুসরণ করছি। আমরাও হ্যাপি নিউ ইয়ার এর মতো জঘন্য এক উৎসবকে আপন করে নিয়েছি।

এভাবেই নানান উৎসাহ-উদ্দীপনা, পৈশাচিক আনন্দের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বব্যাপী সকল সাম্রাজ্যবাদী, ধনীগণ আড়ম্বরতার সাথে গ্রহণ করে নেয় এই ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’। Happy New Year -কে হ্যাপি রাখার জন্য আমাদের করতে হবে। সেটা হচ্ছে কঠোর অধ্যবসায় ও পরিশ্রম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top