হাকালুকি হাওর (Hakaluki Haor) বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর এবং এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ মিঠাপানির জলাভূমি। বৃহৎ এই হাওরটি দেশের মৌলভীবাজার এবং সিলেট জেলার ৫টি উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। এমনকি এটি প্রায় ২৩৮টি ছোট-বড় বিলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে, যা সত্যিই বিরল। আয়তনের দিক থেকে এই হাওরটি প্রায় ২০,৪০০ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এখানে বাংলাদেশের মোট জলজ উদ্ভিদের অর্ধেকের বেশি এবং সঙ্কটাপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী বহু প্রজাতির দেখা মেলে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নিদর্শন এই হাওরটিকে ‘রামসার সাইট’’ হিসেবেও ঘোষনা করা হয়েছে।
প্রতিবছর বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমনপিপাসু মানুষেরা ছুটে আসে এই হাকালুকি হাওর পরিদর্শনে। তাই হাকালুকি হাওরের সৌন্দর্য্য, বৈচিত্র্য, অবস্থান, ইতিহাস, ভ্রমনের আদর্শ সময় ও ভ্রমনের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকছে এই লেখাতে।
হাকালুকি হাওরের অবস্থান
হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলায় অবস্থিত। এটি ৫টি উপজেলা ও ১১টি ইউনিয়ন জুড়ে বিস্তৃত। এই হাওরের ৫% বিয়ানীবাজার, ১০% গোপালগঞ্জ, ১৫% ফেঞ্চুগঞ্জ, ৩০% কুলাউড়া ও ৪০% অংশ বড়লেখা উপজেলার অন্তর্গত। এই হাওরটি সমগ্র বাংলাদেশের ছোট-বড় ১০টি নদী ও প্রায় ২৪০ টি বিল জুড়ে বিস্তৃত। বাংলাদেশের বৃহত্তম এই হাকালুকি হাওরের আয়তন ১৮১.১৫ বর্গ কিমি।
এর ভৌগোলিক অবস্থান ২৪°৩৫´-২৪°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০১´-৯২°০৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। ভূতাত্ত্বিকভাবে এই হাওরের অবস্থান হলো: উত্তরে ভারতের মেঘালয় পাহাড় এবং পূর্বদিকে ত্রিপুরা পাহাড়ের পাদদেশ এবং পশ্চিমে ভাটেরা পাহাড় পরিবেষ্টিত এই হাওরটি। হাকালুকি হাওরের বিশাল জলরাশির মূল প্রবাহস্থান হলো জুরী এবং পানাই নদী। এই নদীগুলোর জলরাশি হাওরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত কুশিয়ারা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়।
আরও পড়ুন : সিলেট কিসের জন্য বিখ্যাত
হাকালুকি হাওরের সৌন্দর্য্য ও ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
বর্ষা এবং শীত উভয় ঋতুই সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলা ঘুরে বেড়ানোর জন্য আদর্শ স্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপূর্ব লীলাভূমি এই জেলা সমূহের সম্মিলিত ও অনন্য নিদর্শন হলো হাকালুকি নামক হাওরটি। এটি বছরের বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন অপরূপ দৃশ্যের রূপ ধারণ করে। তবে অধিকাংশ ভ্রমনপিপাসুদের মতে, হাকালুকি ভ্রমণের আদর্শ সময় হচ্ছে নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত।
শীতকালে চারিধারে জেগে উঠে সবুজ ঘাসের গালিচা। সেই গালিচায় মোড়া কিঞ্চিত উঁচুভূমি বিলের পানিতে প্রতিচ্ছবি ফেলে সৃষ্টি করে অপরূপ দৃশ্যের। এসময় হাওরের দিগন্ত বিস্তৃত প্রাকৃতিক দৃশ্য ও বিলের কান্দিগুলো অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন হয়। প্রতিবছর শীতকালে প্রায় ২০০ বিরল প্রজাতির অতিথি পাখির সমাগম ঘটে এই হাওরাঞ্চলে। এ সময় চারপাশে মুখরিত থাকে পাখির হরেক রকম স্বরের কলকাকলিতে। তাছাড়া হালকা কুয়াশার চাদরে ঢাকা আকাশে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় হাওরের জলরাশির মাঝে সূর্যের প্রতিচ্ছবি অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর লাগে।
তবে বর্ষাকালেও এই হাওর সাজে মনোমুগ্ধকরভাবে, তবে প্রকৃতির ভিন্ন রূপে। এসময় চারিদিকে পানি থৈ থৈ করে ভরে উঠে এবং হাওর যেন সমুদ্রের রূপ ধারণ করে। বিশেষ করে জুন-আগস্ট মাস পর্যন্ত এখানে পানিতে ভরপুর থাকে। এই সময় হাওরের পানির গভীরতা হয় ২-৬ মিটার। বর্ষাকালে হাওরের মোট এলাকা হয় প্রায় ১৮,০০০ হেক্টর। এমনকি বর্ষা মৌসুমেও এখানে কিছু অতিথি পাখি দেখা যায়। বিশাল জলরাশি, সমুদ্রের মতো বিশাল ঢেউ, চারদিকে পানি আর পানি হাওরের মাঝে হিজল বন, হাওরের মাঝে ওয়াচ টাওয়ার ইত্যাদি। দেখতে পাবেন অনেক দূরে দূরে দ্বীপের মতো গ্রাম।
হাকালুকি হাওরের অন্যতম ভ্রমন গন্তব্য হলো ইসলামপুর গ্রাম। এই গ্রামটি হাওরের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ গ্রাম। এখানে যেতে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগবে। সেখানে পৌঁছে কোন একটি বাড়িতে রান্নার জন্য অনুরোধ করতে পারবেন। সেখানের বসবাসকারীরাই থাকার ও খাবারের ব্যবিস্থা করে দেবে অর্থের বিনিময়ে বা আতিথেয়তার খাতিরে। সেখানে আপনি একটি বাড়িতে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। অথবা ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেঝেতে বা ছাদে রাত্রিযাপন করে ভ্রমনের আলাদা স্বাদ নিতে পারবেন।
হাকালুকি হাওরে কতটি বিল রয়েছে?
হাকালুকি হাওর কোন একক স্থানীয় বিল বা হাওর নয়। বরং সমগ্র হাকালুকি হাওর জুড়ে প্রায় ২৩৮ টি আলাদা আলাদা বিল রয়েছে। প্রায় সবগুলো বিলেই সারা বছরব্যাপী পানিতে থৈ থৈ থাকে। হাকালুকির উল্লেখযোগ্য বিলগুলো হলো: বালিজুরি বিল, তেকুনি বিল, বিরাই বিল, পাউল বিল, চৌকিয়া বিল, চিনাউরা বিল, লাম্বা বিল, দুধাল বিল, পারজালা বিল, চাতলা বিল, ডুলা বিল, ফুটি বিল, পিংলার কোণা বিল, কুকুর ডুবি বিল, তুরাল বিল, জুয়ালা বিল, কাইয়ারকোণা বিল, মায়াজুরি বিল, মুছনা বিল, বারজালা বিল, কাটুয়া বিল, রাহিয়া বিল, দিয়া বিল ইত্যাদি।
এসকল বিলগুলো সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। তাছাড়া প্রায় ১০টি নদীর পানি এসে এই বিলগুলোকে পূরিপূর্ণ করে রাখে।
হাকালুকি হাওরের নামকরণ | হাকালুকি হাওরের ইতিহাস
হাকালুকি হাওর নামের উৎপত্তির পেছনে বিভিন্ন জনশ্রুতি ও লোককাহিনী জড়িয়ে রয়েছে। লোকমুখে জানা যায়, প্রায় ২,০০০ বছর আগে, এক প্রবল ভূমিকম্পের কারনে ‘আকা’ নামের এক রাজা ও তার সম্পূর্ণ রাজত্ব মাটির নিচে তলিয়ে যায়। কালক্রমে সেই তলিয়ে যাওয়া নিম্নভূমি রাজত্বের নাম হয় ‘আকালুকি’ এবং পরবর্তীতে হাকালুকি।
অন্য একটি মতানুসারে, অতীতে একসময় বড়লেখা থানার পশ্চিমাংশে ‘হেংকেল’ নামক একটি উপজাতি বসবাস করতো। পাশেই এই বৃহৎ হাওরের অবস্থান থাকায় পরবর্তিতে এটি ‘হেংকেলুকি’ এবং সর্বশেষে হাকালুকি নাম ধারণ করে। অনেকে বলেন- হাকালুকি হাওরের কাছাকাছি একসময় কুকি ও নাগা উপজাতিরা বসবাস করতো। তাদের নিজস্ব উপজাতীয় ভাষায় এই হাওরের নামকরণ করা হয় ‘হাকালুকি’ যার অর্থ ‘লুকানো সম্পদ’।
আরেকটি প্রসিদ্ধ মতানুসারে, বহুকাল আগে ত্রিপুরার মহারাজা ওমর মানিক্যের সেনাবাহিনীর ভয়ে বড়লেখার কুকি দলপতি হাঙ্গর সিং জঙ্গলপূর্ণ ও কর্দমাক্ত এক বিস্তীর্ণ এলাকায় লুকিয়ে যায়। কালক্রমে ঐ এলাকার নামকরন করা হয় হাঙ্গর লুকি। ধীরে ধীরে তা হাকালুকি নামে লোকমুখে প্রচলিত হতে থাকে।
এই হাকালুকি হাওরের ইতিহাস যা-ই হোক না কেনো, প্রকৃতপক্ষে বিশাল এই হাওরের কোন ঐতিহাসিক পটভূমি বিদ্যমান থাকার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
হাকালুকি হাওরের উদ্ভিদবৈচিত্র্য ও জীববৈচিত্র্য
উদ্ভিদ ও প্রানী বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থান হলো হাকালুকি হাওর। অতীতে এখানে আকর্ষনীয় ও ভাসমান বড় বড় অসংখ্য গাছপালার নিদর্শন ছিল। ২০০০ সালের দিকে এখানে চাতলা বিল-এ ছোট আকারের একটি বন ছিল, যা বর্তমানে তেমন বৈচিত্র্য ধরে রাখতে পারেনি। হাকালুকি হাওরের স্থায়ী জলাশয় গুলোতে নানা জাতের উদ্ভিদ জন্মায়। উল্লেখযোগ্য তথ্যমতে, হাকালুকি হাওরে প্রায় ৫২৬ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে ও প্রায় ১২০ প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ।
জীববৈচিত্র্যের দিক থেকেও হাকালুকি হাওর স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখানে প্রায় ৪১৭ প্রজাতির পাখির বসবাস রয়েছে। এর মধ্যে ১১২ প্রজাতির অতিথি পাখি ও ৩০৫ প্রজাতির দেশীয় পাখি। বন্যপ্রানীর এই অভয়াশ্রমে রয়েছে ১৪১ প্রজাতির বন্যপ্রাণী। জলজ প্রানীর মধ্যে এখানে আছে ১০৭ প্রজাতির মাছ। আছে ১৫০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছ। হাওরের স্বাদু ও মিঠাপানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মধ্যে রয়েছে- পাবদা, মাগুর, শিং, কৈ, আইড়, চিতল, বাউশসহ আরও নানা প্রজাতির দেশীয় বিলুপ্তির পথের মাছগুলো।
ভিডিও তে দেখুন হাকালুকি হাওর
এছাড়াও এই হাওরে নানা জলজ ও স্থলজ ক্ষুদ্র অনুজীব ও নানা ধরনের কীট-পতঙ্গ রয়েছে এবং আরও আছে বিলুপ্ত প্রায় ২০ প্রজাতির সরীসৃপ। সামগ্রিকভাবে ইকো-ট্যুরিজমের জন্য এটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি স্থান। প্রতিবছর শীতকালে এখানে প্রায় ২০০ বিরল প্রজাতির অতিথি পাখি আগমন হয়।
বৈচিত্র্যময় এই স্থানটিতে উপরোক্ত প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ছাড়াও রয়েছে স্থানীয় পেশাজীবি মানুষের জীবনব্যবস্থা ও ইতিহাস, সামাজিক আচার-ব্যবহার, ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ। তবে ধীরে ধীরে এখানের জীববৈচিত্র্য ও উদ্ভিদবৈচিত্র্য বিলুপ্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বর্তমানে বহু উদ্ভিদ এবং পাখির পাশাপাশি প্রায় ৩২ প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিভিন্ন পর্যায়ে বিপন্নপ্রায়। তাই হাকালুকি হাওরের টেকসই উন্নয়ন করলে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ইকোটুরিজ্যম শিল্প বিকাশের এক অনন্য সুযোগ উন্মোচিত হবে।
হাকালুকি হাওরের বাথান পদ্ধতি
হাকালুকি হাওরের পাশে বসবাসকারী স্থানীয় মানষের গবাদিপশু পালনের একটি বিশেষ ও সহজসাধ্য পদ্ধতি হলো গাথান পদ্ধতি। শুষ্ক মৌসুমে হাকালুকি হাওরের বিশাল প্রান্তরজুড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গরু-মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি প্রানী অবাধে বিচরণ করে। মূলত হাওর উপকূলবর্তি এলাকার লোকজন, ফসল উঠে গেলে বছরের শুষ্ক মৌসুমের নির্দিষ্ট কয়েক মাস এই বাথান পদ্ধতিতে পশুপালন করে।

এসময় আশেপাশের এলাকার লোকেরা তাদের গৃহপালিত গবাদি পশু পাঠিয়ে দেন হাওরে বসবাসরত একশ্রেণীর মানুষের কাছে। হাওরের মানুষজন সেই প্রানীগুলোকে তাদের তত্বাবধানে রাখে। এই কাজের বিনিময়ে হাওরের লোকেরা গবাদিপশুর দুগ্ধ পায়। এসময় প্রচুর দুধ উৎপাদন হওয়ায়, স্থানীয়ভাবে হাকালুকি হাওর এলাকা দুধ ও দৈ-এর জন্য বিখ্যাত। নির্দিষ্ট সময় পরে প্রকৃত মালিক এসে গরু-বাছুর ফেরত নেয়। এই পুরো ব্যবস্থাকেই হাওর এলাকায় ‘বাথান’ বলা হয়।

হাকালুকি হাওর ভ্রমনে যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন পথে এবং বিভিন্ন যাতায়াত মাধ্যমে হাকালুকি নামক হাওরাঞ্চলে ভ্রমনে যাওয়া যায়। তবে অধিকাংশ জেলা থেকেই এখানে যাওয়ার ক্ষেত্রে ঢাকা অতিক্রম করে যেতে হয়। তাই সাধারনভাবে দেশের রাজধানী ঢাকা থেকে হাকালুকি হাওরে যাওয়ার পদ্ধতিটাই উপযুক্ত। ঢাকা থেকে এই হাওরে যাওয়ার ২টি পথ পরিকল্পনা নিচে তুলে ধরা হলো:
(১)
ঢাকা থেকে বাংলাদেশের বৃহত্তম হাওরে যেতে প্রথমে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় যেতে হবে। তারপর কুলাউড়া থেকে অটোরিক্সা বা রিক্সা ভাড়া করে সরাসরি হাওরাঞ্চলে যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ঢাকা থেকে কুলাউড়া যেতে- ‘ঢাকা থেকে সিলেটগামী যে কোন বাসে কুলাউড়া যেতে পারবেন।
এর জন্য ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালি, ফকিরাপুল, গাবতলী, আবদুল্লাপুর বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটের বাসগুলো ছেড়ে যায়৷ এস আলম, শ্যামলী, গ্রীন লাইন, সৌদিয়া ও এনা পরিবহনের এসি বাস যাতায়াত করে। ঢাকা থেকে সিলেট যেতে আপনারা শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, এনা পরিবহনের নন এসি বাসও পেয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে আরও কম খরচেই টিকেট নিতে পারবেন। অথবা সরাসরি ঢাকা থেকে কুলাউড়া উপজেলায় যেতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে জয়ন্তিকা, পারাবত, কালনী এক্সপ্রেস কিংবা উপবন ট্রেনে করে কুলাউড়া যেতে পারবেন। সেখানের স্টেশনে নেমে যেতে পারবেন। তারপর রিক্সা করে সরাসরি হাকালুকির প্রান্তে।
(২)
এক্ষেত্রেও রেলওয়ের পথ ধরে হাকালুকি ভ্রমনে যেতে পারবেন। এর জন্য কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ট্রেনে যেতে হবে। এই স্টেশনগুলো থেকে রাতে উপবন এক্সপ্রেসে চড়ে সিলেটের ঠিক আগের স্টেশন ‘মাইজগাও’ -তে নামতে হবে। তারপর মাইজগাও থেকে ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত মাত্র ১ কিলোমিটার পথ হেটে কিংবা অটোরিক্সা দিয়ে যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে কুশিয়ারা নদী পেড়িয়ে গেলেই হাকালুকির হাওরে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
এক্ষেত্রে একটি নৌকাতে করেই ১০-১৫ জন একসাথে ভ্রমন করা যায়। একইসাথে নৌকাভ্রমন এবং হাকালুকি ভ্রমন করার জন্য এই উপায়টিই উপযুক্ত। তাছাড়া বন্ধুরা মিলে ভ্রমনে গেলে এভাবে হাকালুকি ঘুরে আসতে পারেন।
শেষকথা
উপরোক্ত আলোচনায় হাকালুকি হাওর সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী তুলে ধরা হয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি সেখানের স্থানীয়দের জীবনযাত্রা এবং সুন্দর ব্যবহার উপভোগ্য। তাই আপনিও প্রকৃতিপ্রেমী হয়ে থাকলে ভ্রমনে যেতে পারেন দেশের সর্ববৃহৎ হাওর- ‘হাকালুকি হাওর’ এ।