শিক্ষা জীবনে আমাদের অনেক কিছুরই প্রয়োজন পড়ে। সেই সকল প্রয়োজন মেটাবার জন্য বিভিন্ন টুলস ব্যবহার হয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় সেই টুলসগুলো হাতের কাছে থাকে না কিংবা সেগুলো সহজলভ্য হয় নয়। শিক্ষাজীবনকে সহজ করতে এমন কিছু টুলস বা গেজেট তৈরি করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। আজ সেগুলোরই কয়েকটা এখানে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
১. Rocket Bookflip
এটা একটি ফ্লিপ নোটবুক। এটা রকেট কম্পানি ডিজাইন করেছে। বেশিরভাগ মানুষ ডান হাতে লেখালেখি করে। সেজন্য নোটবুক গুলো ডান হাতের মানুষজনের ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা হয়। যা বাম হাতে লেখেন এমন লোকদের জন্য ব্যবহার একটু কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া যারা বিজ্ঞান, আর্কিটেকচার বা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করে, তাদের তো প্রতিনিয়ত নোটবুকে বিভিন্ন ডিজাইন করতে হয়। এর জন্য প্রচুর কাগজের অপচয় হয়। এছাড়া নোটবুকে ডিজাইন করলে সেটা মোছা যায় না। পেন্সিল দিয়ে লিখলে সেটা রাবার দিয়ে মুছতে গেলে কাগজের ক্ষতি হয়।
এই ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে বাজারে এসেছে এই পণ্যটি। এটার উপর আপনি যত খুশি ততবার লিখতে পারবেন। এটার সাথে আপনাকে একটি তরল কেমিক্যাল দেবে। সেটা ছোট্ট কাপড়ে মাখিয়ে লেখা মুছে ফেলতে পারবেন। এটা ছোট বাচ্চাদের জন্য অনেক উপকারী। তাদের হাতের লেখা শেখানোর জন্য এটা খুবই উপযোগী একটি গেজেট।
২. Cubinotev
আমাদের জীবনে কাজ-কর্মে বিভিন্ন জিনিস প্রিন্ট আউট করতে হয়। নিজের যদি প্রিন্টার না থাকে তাহলে দোকানে গিয়ে প্রিন্ট করতে হয়। সামান্য একটি পেজ প্রিন্ট করতে অনেক টাকা চার্জ করে বসে দোকানদার। এছাড়া অনেকের সামর্থ্য নেই প্রিন্টার কেনার। প্রিন্টার কিনলেও অনেক খরচ। প্রিন্টারের কালিগুলো খুবই দামি। বিশেষ করে স্টুডেন্টদের জন্য এটা খুবই ব্যয়বহুল।
এই সমস্যা থেকে প্রিন্টার জন্য এই ছোট্ট প্রিন্টার বাজারে এসেছে। এই প্রিন্টার শুধু কম্পিউটারের জন্যই নয়। এটা আপনি মোবাইলের সাথেও কানেক্ট করতে পারবেন। ব্লুটুথ এর মাধ্যমে আপনার pdf প্রিন্ট করবে এই প্রিন্টার। এটা দামেও সস্তা।
৩. Sync pen
আমরা কলম ব্যবহার করি লেখালেখির জন্য। কলম দিয়ে যেটা লিখে সেটা যদি ডিজিটাল ফরমেটে কনভার্ট করতে চাই তাহলে সেটা স্ক্যান করতে হবে নচেৎ ছবি তুলতে হবে। কিন্তু এমন কোনো পদ্ধতি কি আছে, যাতে স্ক্যান বা ছবি তোলা ছাড়াই লেখা বা নকশা ডিজিটাল ফরম্যাটে পাওয়া যায়?
হ্যাঁ আছে, এই জন্যই তৈরি করা হয়েছে এই কলম। আপনি যা লিখবেন তা সরাসরি অ্যাপের মাধ্যমে আপনার মোবাইলে চলে আসবে। এটা খুবই দারুণ একটি কলম। ভিডিও কল কনফারেন্সে বিভিন্ন প্রজেক্ট এর বিষয়বস্তু সরাসরি লিখে পাঠাতে পারবেন।
এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় নোটবুকে লেখা সংরক্ষণ করলে নোটবুক হারিয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এই ডিজিটাল ফরমেটে যদি আপনি লেখা সংরক্ষণ করেন তাহলে তা হারানোর সম্ভাবনা নেই।
৪. Reco Smart Recorder
এটা একটি অদ্ভুত ডিভাইস। আপনি কী লিখলেন না লিখলেন সেটা এই ডিভাইস রেকর্ড করে রাখে। এমনকি এটাতে লেখাগুলোর ভয়েসও শোনা যায়। অর্থাৎ আপনি যা লিখেছেন সেটা শুনতেও পাবেন। ক্লাসে শিক্ষকের লেকচার নোট করার জন্য এটা খুবই উপকারী একটি ডিভাইস।
আরো পড়ুন: বাংলা আর্টিকেল লিখে আয় | পেমেন্ট বিকাশে
৫. Paperang PZ
এটা একটি মিনি প্রিন্টার। এটা এতটাই ছোট প্রিন্টার যে আপনি এটাকে পকেটে নিয়ে ঘুরতে পারবেন। অনেক সময় দেখা যায় ক্লাসে কাউকে কোনো ছোট্ট প্যারাগ্রাফ শেয়ার করা লাগতে পারে। ধরুন আপনার কোনো লেখা অন্য কেউ চাইলো, তখন সে সেটা নিজের নোটবুকে লিখে কপি করবে। এটাতে লিখতে সময় ব্যয় হবে। এর সহজ উপায় হচ্ছে এই প্রিন্টার। আপনি লেখাটার ছবি তুলে মোবাইলের ব্লুটুথ সংযোগের মাধ্যমে প্রিন্টার দ্বারা প্রিন্ট করতে পারবেন। এই প্রিন্টারে আপনি আপনার সেলফিও প্রিন্ট করতে পারবেন।
এটার আরো একটি ভালো দিক হলো এটাতে কোনো কালি ব্যবহার করতে হয় না। এটা থার্মাল প্রিন্টার সিস্টেমে পরিচালিত।
৬. Aura Mate
আমাদের শিক্ষাজীবন হোক বা কর্মজীবন। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দরকারি কাগজপত্র বা বই স্ক্যান করতে হয়। যেগুলো স্ক্যান করার মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায় এবং বিভিন্ন মানুষের কাছে পাঠানো যায়। প্রচলিত স্ক্যানারগুলো অনেক ব্যয়বহুল। এছাড়া সেটা সব জায়গায় বহন করা যায় না। বিদ্যুৎ সংযোগ সর্বদা প্রয়োজন পড়ে।
কিন্তু এই aura mete স্ক্যানার ব্যবহারের জন্য কোনো বিদ্যুৎ সংযোগের প্রয়োজন পড়ে না। এটায় রিচার্জেবল ব্যাটারি আছে। এটা এতটা ছোট যে আপনি যে কোনো জায়গায় এটা বহন করতে পারবেন এবং সেট করতে পারবেন। এর আছে অনেক ভালো রেজুলেশনের ছোট ছোট দুইটি ক্যামেরা। এছাড়া আছে ফ্ল্যাশ লাইট। এটা দিয়ে আপনি খুব সহজেই যেকোনো কিছু স্ক্যান করতে পারবেন এবং এটার অ্যাপ এর মাধ্যমে সেগুলোকে পিডিএফ ফাইলেও রূপান্তর করতে পারবেন অনায়াসে। এটা স্টুডেন্টদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। লাইব্রেরীর অনেক পুরাতন দামি বইগুলো স্ক্যান করে ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণ করার জন্য এটা একটি বেস্ট গেজেট।
৭. Edesk hub
অফিসে ডেস্কে বসে কাজ করতে হয়। সেখানে সবগুলো ডেস্ক একই উচ্চতার। এইজন্য দেখা যায় খাটো মানুষদের মাথা উঁচু করে কাজ করতে হয় এবং লম্বা মানুষদের মাথা ঝুঁকিয়ে কাজ করতে হয়। এতে করে মেরুদন্ড ও ঘাড়ে খুবই চাপ পড়ে। শারীরিক যন্ত্রণার কারণে কাজে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। এই ডেস্ক প্রয়োজন মাফিক উঁচু-নিচু করা যায়। এটার মধ্যে আছে ইউএসবি পোর্ট। যেটা আপনি মোবাইলসহ ল্যাপটপও চার্জ করতে পারবেন। এটা দেখতেও অনেক স্মার্ট। তাই অনেক আধুনিক অফিসেও এই ধরনের ডেস্ক ব্যবহার করা হয়।
৭. Anker Bluetooth
এটা সরাসরি লেখাপড়ার সাথে সম্পৃক্ত কোনো ডিভাইস নয়। এটা একটি স্পিকার। প্রথম দেখায় মনে হবে এটা কোনো পেন্সিল বক্স। কিন্তু আসলে এটা একটি স্পিকার এবং এটা ব্লুটুথ এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এটা খুবই অল্প সময়ের মধ্যে চার্জ করা যায়। এমনকি এটা পানির মধ্যে চুবিয়ে রাখলেও এটাতে পানি প্রবেশ করে না।
[বি.দ্র. এখানে উল্লেখিত পণ্যগুলো বড় বড় ই-কমার্স সাইটে পাওয়া যায়। এগুলো চায়নাতে উৎপাদন হয়। বাংলাদেশর দোকানে এগুলো বিক্রি হয় না।]