ই পাসপোর্ট

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ | ই পাসপোর্ট আবেদন

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ অথবা ই পাসপোর্ট আবেদন সম্পর্কিত আলোচনা থাকছে আজকের এই লেখাতে।  বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও ই পাসপোর্ট সেবা শুরু হয়ে গেছে। এতে করে বাংলাদেশের মানুষের ভোগান্তি অনেকটা কমবে বলে আশা করা যায়। ইমিগ্রেশন এর জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না। পাসপোর্ট জালিয়াতির তো কোনো সুযোগই থাকবে না। পাসপোর্ট পরীক্ষা এখন থেকে সম্পূর্ণ যান্ত্রিক উপায় হবে।

ই পাসপোর্ট এর সুবিধা সমূহঃ ভ্রমণকারীরা ই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে সহজ ও দ্রুত ভ্রমণ করতে পারবেন। মোটামুটি এখন সব দেশের বিমানবন্দরে ই-গেট সেবা চালু হয়েছে। এর ফলে বিমানবন্দরগুলোতে ভিসা চেকিং এর জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। খুব দ্রুত ইমিগ্রেশন শেষ হয়ে যাবে।

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন

যখন কোনো ভ্রমণকারী ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভ্রমণ করবেন। প্রশাসন চাইলে সাথে সাথে কেন্দ্রীয় তথ্যাগারের (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি-পিকেডি) সাথে কন্টাক করে আপনার সম্পর্কে তথ্যাদি জানতে পারবে।

এছাড়া ই-গেটের নির্দিষ্ট একটি স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে সেখানকার ক্যামেরা ছবি তুলে নেয়। সাথে থাকবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিরীক্ষার ব্যবস্থা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনার ইমিগ্রেশন শেষ হতে দেরি হবে না। যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে লালবাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

যদি কারো বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকে। যেমন সন্ত্রাসী, দেশদ্রোহী কেউ থাকলে মুহূর্তেই সে ধরা পড়ে যাবে। এটা পরিচালনা করে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও)। ইন্টারপোল ছাড়াও বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এসকল তথ্য যাচাই-বাছাই করতে পারবে।

এটায় অনেক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকার ফলে এই ধরণের পাসপোর্ট জালিয়াতি করা দুঃসাধ্য।

ই পাসপোর্ট করতে  কী কী লাগে

  • ১. ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদনের সারাংশ বা সামারী (Application Summery)
    আবেদনের কপি।
  • ২. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
  • ৩. আপনার ঠিকানার প্রমাণপত্র বা ইউটিলিটি বিলের কপি।
  • ৪. আগের পাসপোর্টের ফটোকপি এবং আসল পাসপোর্ট।
  • ৫. মা বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি (শিশুদের জন্য আবশ্যক)
  • ৬. পেশাগত সার্টিফিকেটের ফটোকপি বা চাকরির ID কার্ড। ছাত্র হলে স্কুলের আইডি কার্ড লাগতে পারে।
  • ৭. নাগরিক সনদ বা চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট।

[[বি.দ্র.  ই-পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিরত লোকদের জন্য পাসপোর্ট অফিসে অনাপত্তিপত্র-এনওসি জমা দিতে হবে।

যদি  অবসরপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন তবে  আপনার অবসরের প্রমাণপত্র অর্থাৎ আপনার পেনশনের যে দলিল রয়েছে সেটি ই পাসপোর্ট অনলাইন ফরমের সাথে জমা দিতে হবে।

আপনি বিবাহিত হলে, বিবাহ সনদ অর্থাৎ নিকাহনামা জমা দিতে হবে।

যদি বিপত্নীক বা বিধবা হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার তালাকনামা পাসপোর্ট অফিস জমা দিতে হবে।]]

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার জন্য এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। (www.epassport.gov.bd)
এখানে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন এর তথ্যানুসারে অনলাইনে আবেদন করুন। ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদনে ব্যক্তিগত তথ্য, নাম-ঠিকানা এবং পিতা-মাতার নাম সঠিকভাবে লিখুন। আবেদন করতে হলে কোনো কাগজপত্র সত্যায়ন করার দরকার নেই। ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরমে ছবি দিলে সেটা সত্যায়িত করারও দরকার নেই।

কিন্তু, অবশ্যই জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (NID) বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ মোতাবেক নাম, পিতা-মাতার নাম এবং অন্যসকল তথ্য পূরণ করা লাগবে।

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করতে হলে অবশ্যই এই দিক নির্দেশনা অনুসরণ করা লাগবে। যদি কোনো প্রকার ভুল করে থাকেন তবে আপনাকে পরে বিভিন্ন ঝামেলার সম্মুখীন হতে হবে।

আবেদনের আগে অবশ্যই ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদনের নিয়মাবলী সম্পর্কে অবগত হন। কীভাবে আপনি আপনার ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করবেন তা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হলো।

১ম ধাপঃ আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

প্রথমে epassport.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। এখানে আপনি আপনার অঞ্চলের পাসপোর্ট অফিস ও থানা নির্বাচন করবেন।

এই ওয়েবসাইটে Directly to online Application অপশনে ক্লিক করুন। এরপর একটি পেইজ আসবে। সেখানে আপনার জেলা এবং থানার নাম নির্বাচন করবেন।

এরপর ওয়েবসাইটে  আপনাকে আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করাতে হবে।

সেই অপশনে আপনি আপনার ইমেইল ঠিকানা লিখুন। অবশ্যই আপনার ইমেইলের পাসওয়ার্ড যেন আপনার মনে থাকে। কেননা পাসওয়ার্ড না জানার ফলে আপনি ইমেইল ভেরিফাই করতে পারবেন না।

আপনার ইমেইল ঠিকানা লেখা হলে রোবট ভেরিফিকেশনে টিক দিয়ে Continue বাটনটিতে ক্লিক করবেন।

২য় ধাপঃ ইমেইল ভেরিফিকেশন।

আপনার ইমেইলে ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে একটি ভেরিফিকেশন লিংক প্রেরণ করবে। আপনি সেই লিংকে ক্লিক করবেন এবং আপনার ইমেইলটি ভেরিফাই করবেন।

৩য় ধাপঃ ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ।

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার জন্য ইতিমধ্যে আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। এবার ওই ওয়েবসাইটে গিয়ে লগইন (Login) করুন।

লগইন করার পর একটি ফরম আসবে।

সেখানে আপনি আপনার নাম, যাবতীয় তথ্য এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর সাবমিট করবেন। এরপর Save and Continue অপশনে তে ক্লিক করবেন।

আরো পড়ুন: ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন?

আপনার যদি জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে, তবে কী করবেন?

যদি আপনার বয়স ১৮ বছরের কম হয় এবং জাতীয় পরিচয়পত্র না করে থাকেন। তাহলে অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন দিয়ে আপনি ই পাসপোর্টের আবেদন করবেন।

যদি আপনার বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে হয়, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র ( NID) বা জন্ম নিবন্ধন (BRC ) এই দুইটির যে কোনো একটি দিয়ে আপনি আবেদন করতে পারবেন।

আপনার বয়স যদি ২০ বছরের বেশি হয়, তবে অবশ্যই আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর দিয়েই আবেদন করতে হবে। আপনি জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মাট কার্ড যদি এখনও না পেয়ে থাকেন তবে জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইন কপি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

ই পাসপোর্ট অনলাইন ফরম পূরণ করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়মঃ

১. যদি আপনার আগের কোনো পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে Yes দিন। আর না থাকলে No, I don’t have any previous/ handwritten passport.

২. আপনার স্থায়ী ঠিকানা (Permanent Address ) ও অস্থায়ী ঠিকানা ( Present Address) সঠিকভাবে ফিল-আপ করুন।

৩. আপনার পিতা মাতার নাম তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র মোতাবেক লিখুন। আপনার স্ত্রী বা স্বামীর নামও জাতীয় পরিচয়পত্রে যেভাবে আছে ঠিক সেভাবেই লিখুন।

৪. ইমারজেন্সি প্রয়োজন পড়লে যোগাযোগের জন্য আপনি আপনার মা, বাবা, ভাই, বোন বা পরিবারের অন্য কোনো আত্মীয়ের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দেবেন।

৫. এরপর আপনি পাসপোর্টের ধরণ কেমন হবে, কত পৃষ্ঠার হবে, এবং ডেলিভারী পদ্ধতি সাধারণ না কি জরুরী তা নির্বাচন করুন।

সর্বশেষ আপনি সব তথ্যগুলো আবারও নিরীক্ষা করে তারপর আবেদন  Submit বাটনে ক্লিক করুন।

৪র্থ ধাপঃ ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করার পর সর্বশেষ সেকশনে পাসপোর্ট অফিস কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ থেকে বায়োমেট্রিকের অর্থাৎ আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিশ স্ক্যান করার দিন নির্বাচন করতে হবে।

৫ম ধাপঃ ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন প্রিন্ট করতে হবে।
আপনার ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করা সম্পন্ন হলে প্রিন্ট করার জন্য ২টি পেজ পাবেন।

  1. Application Summery
  2. Online Registration Form

এই দুইটি পেজ আপনি প্রিন্ট করে নিবেন। পাশাপাশি পিডিএফ ফাইল করে আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে সংরক্ষণ করে নেবেন।

৬ষ্ঠ ধাপঃ অনলাইনে বা ব্যাংকের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট করার ফি জমা দেবেন এবং সেটার রশিদ ও সমস্ত জরুরী কাগজপত্র একটি ফাইলে পিনআপ করে রাখবেন। এরপর পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার নির্দিষ্ট দিনে পাসপোর্ট অফিসে যাবেন।

পাসপোর্ট অফিসে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র এবং ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ দাখিল করবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এরপর আপনার পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পালা।

কীভাবে পাসপোর্ট ফি ব্যাংকে জমা দিতে হয় তা নিচে দেওয়া হলো।

এছাড়া কত টাকা লাগে, কীভাবে কী করতে হয় তা বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন বাতিল করার নিয়মঃ

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন যদি করে থাকেন আপনি, তবে নিজ থেকে সেই আবেদন বাতিল করতে পারবেন না। আবেদনটি বাতিল করতে হলে আপনি আপনার জেলার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালকের নিকট লিখিত আবেদন করবেন।

যদি আপনার আবেদন ফরম পূরণে কোনো ধরণের ভুল হয়ে থাকে এবং আপনি আবেদন বাতিল করতে চান, তবে সেটা আপনি তা নিজে থেকে বাতিল করতে পারবেন না। একমাত্র পাসপোর্ট অফিস সেটা সংশোধন করার সক্ষমতা রাখে।

ই পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার নিয়ম। ই পাসপোর্ট ব্যাংক ড্রাফট করার নিয়ম।

ব্যাংক এর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি ই পাসপোর্ট এর ফি জমা দিতে পারবেন।

এর জন্য প্রয়োজন পড়বে আপনার ই পাসপোর্ট আবেদনের সামারি (E Passport Application Summery ) ও রেজিস্ট্রেশন ফর্ম ( Registration Form)

ই পাসপোর্ট আবেদন ফরমে যেভাবে তথ্যগুলো দিয়েছেন, সেভাবে নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বর ও পাসপোর্টের পৃষ্ঠা ও মেয়াদ দিতে হবে ফি জমা করার ক্ষেত্রে। আপনি ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদনের দুইটি প্রিন্ট নিয়ে যেকোনো ব্যাংকে গেলেই সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তাগণ আপনাকে সাহায্য করবে। এর জন্য আপনাকে চিন্তিত হতে হবে না।

ফি পরিশোধ করার পর ব্যাংক অফিসারের নিকট থেকে চালান ফরমের প্রিন্ট কপি বুঝে নিন। ই পাসপোর্ট ফি-এর চালানের কপিটি কিন্তু পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। অতএব যত্ন সহকারে এটা সংরক্ষণ করুন।

আগে শুধুমাত্র সোনালী ব্যাংকে ই পাসপোর্ট এর ফি জমা দেওয়া যেত। এখন নতুন করে আরও পাঁচটি ব্যাংক যুক্ত হয়েছে, যেখানে আবেদনকারীরা ফি জমা দিতে পারবে।

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট ফি প্রদান

বর্তমানে ই পাসপোর্টের নির্ধারিত ফি ২ ভাবে পরিশোধ করা যায়। যথা:

  • Online Payment
  • A-challan Payment

অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন ফি দিতে চাইলে, আবেদন ফরম পূরণের পর পেমেন্ট অপশন থেকে যেকোন একটি মোবাইল ব্যাংকিং, E-wallet, ইন্টারনেট ব্যাংকিং অথবা কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। এক্ষেত্রে পেমেন্ট অপশন অনুযায়ী কিছুটা চার্জ কেটে নিতে পারে। অনলাইন পেমেন্ট পরিশোধ করার পর পেমেন্ট স্লিপটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন।

A-challan এর মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য অনুমোদিত ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে অ্যাপ্লিকেশন সামারির সাথে পাওয়া পেমেন্ট স্লিপটি দিন। তারপর A-challan এর মাধ্যমে আপনার পাসপোর্টে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করবে ব্যাংক কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে আপনাকে একটি চালানের কপি প্রদান করা হবে। এই চালানের কপি, আবেদনের কপি ও এপ্লিকেশন সামারির প্রিন্ট কপি একত্রিত করে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

ফি জমা দেওয়ার পাঁচটি ব্যাংকের নামঃ

  • ব্যাংক এশিয়া।
  • ট্রাস্ট ব্যাংক।
  • ঢাকা ব্যাংক।
  • প্রিমিয়াম ব্যাংক।
  • ওয়ান ব্যাংক।

এছাড়া আপনি অনলাইনেও ই পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারেন। এর জন্য echallan.gov.bd এই ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। এখানে আপনি বিকাশ কিংবা রকেট এর মাধ্যমে খুব সহজেই পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন।

  • ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা খরচ হয়?
  • ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
  • ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায়?
  • ই পাসপোর্ট পেতে কত দিন লাগে?
  • ই পাসপোর্ট কত প্রকার?
  • ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ কত দিন?

✓ ই পাসপোর্ট দুটি ভিন্ন মেয়াদী হয়ে থাকে।

১. পাঁচ বছর মেয়াদী।
২. দশ বছর মেয়াদী।

* এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে রাখা ভালো। আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের কম অথবা ৬৫ বছরের বেশি হয় তাহলে আপনি দশ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করতে পারবেন না। তখন আপনাকে পাঁচ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করতে হবে। *

✓ ই পাসপোর্টে ভিসা লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক পাতা থাকে। পাসপোর্টে যত বেশি পাতা থাকবে তত বেশি ভিসা লাগানো যাবে অর্থাৎ তত বেশি দেশ ভ্রমণ করা যাবে।

দুইটি নির্দিষ্ট সংখ্যক পাতা সম্বলিত ই পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
১. ৪৮ পাতা।
২. ৬৪ পাতা।

✓ আপনি কত সময়ের মধ্যে ই পাসপোর্ট পেতে চান ও কত পাতা সম্বলিত এবং কত বছর মেয়াদী, তার উপর ভিত্তি করে সরকার ই পাসপোর্ট ফি নির্ধারণ করে থাকে।

কত সময়ের মধ্যে ই পাসপোর্ট হস্তান্তর করা হয় এটা সরকার তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছে।

১. রেগুলার অর্থাৎ নিয়মিত।  সাধারণত ১৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যেই পাসপোর্ট হস্তান্তর করে।

২. এক্সপ্রেস অর্থাৎ জরুরি। এটায় ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হস্তান্তর হয়।

৩. সুপার এক্সপ্রেস অর্থাৎ অতি জরুরি। এটার মাধ্যমে মাত্র ২ দিনের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।

ই পাসপোর্ট করতে কত ফি লাগে:

✓ ৫ বছরের মেয়াদী ৪৮ পাতার ই পাসপাের্ট

  • নিয়মিত (রেগুলার) ১৫-২১ দিন = ৮,০২৫ টাকা।
  • জরুরী (এক্সপ্রেস) ৭-১০ দিন = ৬,৩২৫ টাকা।
  • অতি জরুরি (সুপার এক্সপ্রেস) ২ দিন = ৮,৬২৫ টাকা।

✓ ৫ বছরের মেয়াদী ৬৪ পাতার ই পাসপাের্ট

  • নিয়মিত (রেগুলার) ১৫-২১ দিন = ৬,৩২৫ টাকা
  • জরুরি (এক্সপ্রেস) ৭-১০ দিন = ৮,৩২৫ টাকা।
  • অতি জরুরি (সুপার এক্সপ্রেস) ২ দিন = ১২,০৭৫ টাকা

✓ ১০ বছরের মেয়াদী ৪৮ পাতার ই পাসপাের্ট

  • নিয়মিত (রেগুলার) ১৫-২১ দিন = ৫,৭৫০ টাকা।
  • জরুরী (এক্সপ্রেস) ৭-১০ দিন = ৮,০৫০ টাকা।
  • অতি জরুরি (সুপার এক্সপ্রেস) ২ দিন = ১০,৩৫০ টাকা।

✓ ১০ বছরের মেয়াদী ৬৪ পাতার ই পাসপাের্ট

  • নিয়মিত (রেগুলার) ১৫-২১ দিন = ৮,০৫০ টাকা।
  • জরুরি (এক্সপ্রেস) ৭-১০ দিন = ১০,৩৫০ টাকা।
  • অতি জরুরি (সুপার এক্সপ্রেস) ২ দিন = ১৩,৮০০ টাকা

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন স্ট্যাটাস কীভাবে চেক করবেন?

এছাড়া বিভিন্ন স্ট্যাটাস এর অর্থ কী এবং এটার সমাধান করার নিয়ম।
ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করার নিয়ম কী।
কীভাবে ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করবেন?

* ই পাসপোর্ট হয়েছে কি না সেটা কীভাবে বুঝবেন?

* পাসপোর্টের বিভিন্ন স্ট্যাটাসের অর্থ কী?

আপনার ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদনটি কোন অবস্থায় আছে অর্থাৎ আপনার এই পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়েছে কি না, সেটা অনলাইনে খুব সহজেই জানা যায়। কিন্তু আপনি কীভাবে অনলাইন ই পাসপোর্ট চেক করবেন?

অনলাইন ই পাসপোর্ট চেক :  অনলাইনে ই পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করার জন্য www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। এরপর এর মেনু থেকে Check E Passport অপশনটি ক্লিক করুন কিংবা Passport Status Check লিংকে ক্লিক করুন। এরপর একটি পেজ আসবে। সেই পেইজে আপনি আপনার এপ্লিকেশন আইডি বা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন আইডি অর্থাৎ ইমেইল ভেরিফিকেশন এর মাধ্যমে যে আইডি খুলেছিলেন সেটার নম্বর (উদাহরণ স্বরূপ OID1000002416) এবং আপনার জন্ম তারিখ সাবমিট করবেন। এরপর I am a human Captcha লেখা বাটনটিতে ক্লিক করে টিক চিহ্ন পূরণ করুন এবং Check বাটন ক্লিক করুন।

এরপর বিভিন্ন প্রকার স্ট্যাটাস দেখাবে। এগুলোর অর্থ ও ব্যাখ্যা ধারাবাহিকভাবে নিচে দেওয়া হলো।

১.  Payment Verification Result- Name Mismatch:

ব্যাংক বা চালানের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর ফি জমা দেয়ার নামের বানানের সাথে ই পাসপোর্ট আবেদনের নামের বানানে কোনো ভিন্নতা অথবা গরমিল থাকলে এমন স্ট্যাটাস আসবে।

এই স্ট্যাটাস পেলে অতিসত্বর পাসপোর্ট অফিস যোগাযোগ করুন। সাথে আপনার পাসপোর্ট প্রাপ্তির রসিদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি অবশ্যই নিয়ে যাবেন।

২. Pending of Assistant Director/ Deputy Director Approval:

আপনার করা ই পাসপোর্ট আবেদনটি Assistant Director/ Deputy Director এর সমমান কোনো এক অফিসার এর চেক করা বাকি। তিনি যতক্ষণ না অনুমোদন (Approve) করছে ততক্ষণ পর্যন্ত স্ট্যাটাস এমনই থাকবে।
এটা চেক হতে সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ দিন লাগতে পারে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি যদি সময় অতিবাহিত হয়ে যায়, তাহলে মনে করবেন পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট হয়তো এখনও পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছায়নি। এই জন্য Assistant Director/ Deputy Director দ্বারা অনুমোদন হতে বিলম্বিত হচ্ছে।

৩. Your Application is pending on payment investigation (Amount mismatch or Reference number mismatch):

ব্যাংকে অথবা চালানে আপনি যে পরিমাণ টাকা জমা দিয়েছেন কিন্তু পাসপোর্ট ফি তার চেয়ে কম বা বেশি হয় তখন এই স্ট্যাটাস দেখাবে।

তাই দ্রুত পাসপোর্ট অফিসে ই পাসপোর্ট এর রসিদ ও চালানের ফটোকপি সহকারে যোগাযোগ করুন।

৪. Pending for Police Approval:

পুলিশ ভেরিফিকেশন ও প্রতিবেদন প্রাপ্তির জন্য আপনার ই পাসপোর্ট আবেদনটি অপেক্ষায় আছে। আপনার বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন হলে দুটো ঠিকানায় তদন্ত করার জন্য বেশি সময়ের দরকার হয়।

৫. Pending for Backend Verification-Pending for Backend Verification:

এটা কোনো জটিল সমস্যা নয়। দুই এক দিনের মধ্যেই এটার সমাধান হয়ে যায়। এই স্ট্যাটাস এর অর্থ হলো, ই পাসপোর্ট আবেদনে আপনার দেওয়া তথ্যগুলো কেন্দ্রীয় পর্যায়ে চেক করা হচ্ছে। আপনার ই পাসপোর্ট আবেদনটি ঢাকায় প্রিন্টিং শাখায় পাঠানোর জন্য পুনরায় সব তথ্যগুলো সঠিক আছে কি না তা চেক করা হয়।

৬. Printing Succeeded:

ই পাসপোর্টটি সফলভাবে প্রিন্ট করা হয়েছে। এখন এটাকে Quality Control শাখায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

৭. QC Succeed, Ready for Dispatch:

পাসপোর্টটাতে কোনো ধরণের ত্রুটি আছে কি না সেটা Quality Control শাখায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরে সব কিছু ঠিক থাকলে আপনার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাঠানোর জন্য তৈরি করা হয়।

৮. Passport is Ready, Pending for Issuance:

ঢাকা থেকে পাসপোর্টটা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আসতে সাধারণত ৪/৫ দিন সময় লাগে। পাসপোর্ট অফিসে এটা পৌঁছানোর পর হস্তান্তরের জন্য তৈরি করা হয়।

তখন আপনার মোবাইলে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার জন্য SMS পাঠানো হবে। SMS যদি না পান তাহলে ২ দিন অপেক্ষা করুন। SMS এসে যাবে।

SMS পেয়ে গেলে আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন। আশা করি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে ই পাসপোর্ট তৈরি করার ভয় মন থেকে দূর হয়েছে।

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ – ই পাসপোর্ট আবেদন লেখাটি পড়ে এখন নিজে নিজে আবেদন করুন। আমার একটি ব্যক্তিগত পরামর্শ হচ্ছে, পাসপোর্ট যদি করতেই হয় তাহলে দশ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট করলেই ভালো হয়। এতক্ষণ Probangla এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

[প্রিয় পাঠক, প্রোবাংলা অনলাইনে প্রবাস বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাসে আপনার কমিউনিটির নানান খবর, ভ্রমণ, আড্ডা, গল্প, স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন info@probangla.com এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।]

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top