ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম

ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২৪

ড্রাগ লাইসেন্স প্রতিটি ফার্মেসি, মেডিকেল শপ খোলার পূর্বে সংগ্রহ করা প্রতিটি ব্যবসায়ীর জন্যই অপরিহার্য। এটি একটি প্রতিষ্ঠানের বৈধতার দলিল।  আজকে এই লেখার মাধ্যমে ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করবো। ড্রাগ লাইসেন্স পেতে চাইলে আপনি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয কাগজপত্র জমা দিতে হবে। আপনার প্রদানকৃত কাগজপত্র সঠিক হলে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে ড্রাগ লাইসেন্স দিয়ে দিবে ঔষধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।

এই লেখাটি পড়লে আরো জানতে পারবেন কিভাবে ড্রাগ লাইসেন্স সংগ্রহ করবেন, ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম ২০২৪, ড্রাগ লাইসেন্স মালিকানা পরিবর্তন, ড্রাগ লাইসেন্স অফিস কোথায় এবং ড্রাগ লাইসেন্স আবেদন ফরম সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য কি কি কাগজ লাগবে

ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সকল নিয়ম কানুন মেনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদনের সঙ্গে দিলে খুব সহজে ড্রাগ লাইসেন্স পেয়ে যাবেন। ঔষধ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সাধারণত দুটি ক্যাটাগরিতে ড্রাগ লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। নিচে তা তুলে ধরা হলো-

  • মডেল ফার্মেসি
  • মেডিকেল শপ

বি:দ্র: মডেল ফ্রামের্সি এবং মেডিকেল শপের জন্য যথ্রাক্রমে ৩০০ বর্গফুট এবং ১১২ ফুট জায়গার প্রয়োজন হবে।

মডেল ফার্মেসির জন্য নিয়োজিত গ্রাজুয়েট এ গ্রেড ফার্মাসিস্টের মাধ্যমে সত্যায়িত রেজিস্ট্রেশনের কপি এবং তাদের অঙ্গীকারনামা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দাখিল করতে হবে।

মেডিকেল শপের জন্য নিয়োজিত বিসি গ্রেট এর ফার্মাসিস্টের সত্যায়িত রেজিস্ট্রেশনের কপি এবং দোকান ভাড়ার চুক্তিনামা ও ভাড়ার রশিদের ফটোকপি আবেদন ফরমের সাথে দাখিল করতে হবে।

ড্রাগ লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ

  • ফরম -৭ সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। (ড্রাগ লাইসেন্স ফরম ডাউনলোড করুন)
  • ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি সত্যায়িত ।
  • আবেদনকারীর NID Card এর ফটোকপি।
  • ট্রেজারে চালানোর মূল কপি জমা দিন।
  • আবেদনকারীর ব্যাংক সচ্ছলতার সনদপত্র।
  • ফার্মাসিস্টের সার্টিফিকেট অঙ্গীকারনামা ও এনআইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিনামা

ড্রাগ লাইসেন্স ফি | ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম

ড্রাগ লাইসেন্স ফি মেট্রোপলিটন ও পৌরসভার মধ্যে হলে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ২৫০০ টাকা এবং পৌর এলাকার বাইরে (ইউনিয়ন কাউন্সিলের অন্তভূক্ত এলাকায়) হলে ১৫০০ টাকা জমা দিতে হবে। এই টাকার উপর আরো বাড়তি ১৫% ভ্যাট প্রদান করতে হবে। তাছাড়া আর কোন বাড়তি ফি আপনাকে প্রদান করার কোন প্রয়োজন নেই। তবে লাইসেন্স ফি পরিবর্তিত হতে পারে।

অনলাইনে ড্রাগ লাইসেন্স আবেদন করার নিয়ম 

বর্তমানে অনলাইনে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যায়। বাংলাদেশের সকল সরকারি সেবক এ অনলাইন ভিত্তিক করার জন্য ব্যাপকভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই BHB প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একত্রে কাজ করে অটোমেটেড ড্রাগ লাইসেন্সিং অ্যান্ড রিনিউয়াল সিস্টেম (ADLRS) তৈরি করেছেন। ২০২১ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী এই ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেছেন।

এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে ড্রাগ লাইসেন্সের আবেদন করতে চাইলে, সর্বপ্রথম আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুতের পর স্ক্যান করে কম্পিউটার বা মোবাইলে সংরক্ষণ করতে হবে। তারপর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে প্রোফাইল ভেরিফিকেশন করতে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে এবং স্ক্যানকৃত কাগজপত্র আপলোড করে আবেদন সাবমিট করুন। 

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে সেই আবেদন সাবমিট হলে, আবেদন পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রদত্ত তথ্য ও আপলোডকৃত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন। তারপর তাদের অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে দৃঢ়ভাবে অনুমোদন দেন। কোন একটি আবেদন বা সংযুক্ত ডকুমেন্টগুলো গ্রহণযোগ্য না হলে, আবেদনটি পুনরায় সাবমিট করার মেসেজ দেওয়া বা বাতিল করার ক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কার্যক্ষমতা রয়েছে।

সকল তথ্য ও কাগজপত্র সঠিক থাকলে ADLRS -এর মাধ্যমে দুই কর্ম সপ্তাহের মধ্যেই একটি নতুন আবেদন অনুমোদন করা এবং আবেদনকারীকে লাইসেন্স প্রদান করা সম্ভব। একইভাবে কেউ তার ড্রাগ লাইসেন্স নবায়নের জন্য ADLRS ব্যবহার করলে মাত্র দুই কর্মদিবসের মধ্যেই তা নিষ্পত্তি করা সম্ভব। 

ড্রাগ লাইসেন্স কত দিনে পাওয়া যায়

ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সকল নিয়ম কানুন মেনে আবেদন করা এবং সকল কাগজপত্র সঠিকভাবে প্রদান করে থাকলে ৯০ কার্য দিবসের মধ্যে ড্রাগ লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।

ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম ২০২৪

ড্রাগ লাইসেন্স ঔষধ ব্যবসার জন্য অতি প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ। এটি হচ্ছে ঔষধ ব্যবসার অনুমতি পত্র। এই অনুমতি পত্রের নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য সরকার প্রদান করে থাকে। তাই মেয়াদ শেষ হলে ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করার প্রয়োজন হয়। নিচে দেখুন ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম ২০২৪ সম্পর্কে।

ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করতে যে সকল কাগজপত্রের প্রয়োজন:

  • মালিকের ব্যাংক স্বচ্ছলতার সনদপত্র ( ব্যাংক সল্ভেন্সি সার্টিফিকেট)।
  • লাইসেন্স ফি জমা দেয়ার ট্রেজারী চালানের মুল কপি।
  • দোকান ভাড়ার রসিদ বা চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। নিজস্ব দোকান হলে দলিলের ফটোকপি।
  • নিয়োজিত ফার্মাসিস্ট/কবিরাজ/হাকিম/ হোমিও ডাক্তারের অঙ্গীকারনামা।
  • দোকানের ট্রেড লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটো কপি কপি৷
  • নিয়োজিত ফার্মাসিস্ট/কবিরাজ/হাকিম/হোমিও ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন সনদের মুল কপি ও সত্যায়িত ফটোকপি
  • মালিকের নাগরিকত্ব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি / ভোটার আই.ডি কার্ডের ফটোকপি ।

এর সাথে সাথে নির্ধারিত ফরম-৭ (বেঙ্গল ড্রাগ রুল ১৯৪৬ এ উল্লেখিত) সঠিকভাবে পুরন করতে হবে।

ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন আবেদন ফি

ফার্মেসির ধরন পৌরসভা বা মেট্রোপলিটন এলাকায় পৌর এলাকার বাইরে (ইউনিয়ন কাউন্সিলের অন্তভূক্ত এলাকায়)
এলোপ্যাথিক ২৫০০/- ১৫০০/-
আয়ুর্বেদিক
ইউনানী
হোমিওপ্যাথিক
বায়োকেমিক
হারবাল
২০০০/- ১০০০/-

লাইসেন্স নবায়ন ফি’র তালিকা (পরিবর্তিত হতে পারে)

ড্রাগ লাইসেন্স অফিস কোথায়

ঔষধ প্রশাসন, ১০৫-১০৬, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০।
টেলিফোন: ৮৮০-২-৯৫৫৬১২৬, ৯৫৫৩৪৫৬
ফ্যাক্স: ৮৮০-২-৯৫৬৮১৬৬
ই-মেইল: drugs@citech.net

শেষ কথা

ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম সম্পর্কিত লেখাটির মাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়লে বিস্তারিত বুঝতে পারবেন ধন্যবাদ।

2 thoughts on “ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২৪”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version