অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংক্রান্ত কোন পোস্ট চোখে পড়লে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষের প্রশ্ন থাকে “ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি প্রয়োজন”? কিন্ত এ প্রশ্নের সহজ কোন সমাধান নেই। কারণ ভোটার আইডি কার্ডে অনেক তথ্য থাকে এবং প্রতিটা তথ্য সংশোধন করার জন্য আলাদা আলাদা কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য যে কাগজপত্র প্রয়োজন হয় ঠিকানা সংশোধন করতে সে কাগজপত্রগুলো আর কোন কাজে লাগে না।
অনুরুপরভাবে ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য জন্ম সনদ, সার্টিফিকেটসহ আরো বেশ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় কিন্ত ভোটার আইডি কার্ড থেকে ছবি পরিবর্তণ করার জন্য এই কাগজপত্রগুলো আর কোন কাজেই লাগে না।
সুতরাং, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে আপনার আইডি কার্ডে যে যে তথ্য ভুল রয়েছে তার পরিবর্তন করার জন্য সঠিক তথ্য যা হবে তার স্বপক্ষে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। আজ আমরা জানাবো ভোটার আইডি কার্ডের কোন কোন ভুলের জন্য কি কি তথ্য বা কাগজপত্র জমা দেওয়া লাগে। সেই সাথে আরো জানতে পারবেন উক্ত ভুলের আবেদনগুলো কোন কোন ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে।
১. ভোটার আইডি কার্ডে নাম সংশোধন:-
১.১) নিজের নামের বানানে যদি ভুল হয়ে যায় যেমন- আরোহি জান্নাত সোনিয়া এর পরিবর্তে আরুহি জান্নাত সনিয়া হবে তাহলে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন-
- ক) আবেদনকারীর পিএসসি/জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)। যদি সার্টিফিকেট কারো থাকে না তাহলে জমা দেওয়া লাগবে না।
- খ) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
- গ) পাসপোর্ট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ঘ) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ঙ) সন্তানদের জন্ম সনদ/সার্টিফিকেট এর ফটোকপি।
- চ) কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ এর ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
- ছ) স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ডের ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
এই কাগজপত্রগুলো জমা দেওয়ার পর নির্বাচন অফিস কর্তৃপক্ষ আপনার ভোটার নিবন্ধন ফরমে উল্লেখিত নাম ও প্রদত্ত স্বাক্ষর চেক করে দেখবে। এই ধরণের আবেদনগুলো সাধারণত “ক” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে এবং এগুলো সংশোধন করা হয় উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে।
১.২) আবার নিজের মূল নাম ঠিক রেখে যদি শুধু নামের পদবী পরিবর্তন করতে চান যেমন- কাজী জাহাঙ্গীর থেকে হবে জাহাঙ্গীর আলম তাহলে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন-
- ক) আবেদনকারীর পিএসসি/জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সনদ (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)।
- যদি সার্টিফিকেট কারো থাকে না তাহলে জমা দেওয়া লাগবে না।
- খ) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- গ) পাসপোর্ট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ঘ) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ঙ) সন্তানদের জন্ম সনদ/সার্টিফিকেট এর ফটোকপি।
- চ) কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ এর ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
- ছ) স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ড এর ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
এই কাগজপত্রগুলো জমা দেওয়ার পর নির্বাচন অফিস কর্তৃপক্ষ আপনার ভোটার নিবন্ধন ফরমে উল্লেখিত পদবী চেক করে দেখবে এবং প্রয়োজন হলে আপনার সম্পর্কে বিভিন্ন মাধ্যমে তদন্ত করতে পারেন। এই ধরণের আবেদনগুলো সাধারণত “ক” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে এবং সংশোধন করা হয় উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে।
১.৩) যদি বাংলা নামের বানান ঠিক থাকে এবং ইংরেজি নামের বানান ভুল হয় অথবা ইংরেজি নামের বানান ঠিক আছে কিন্ত বাংলা নামের বানান ভুল হয়েছে যেমন- বাংলাতে নাম আছে মোঃ কাওছার আলম কিন্ত ইংরেজিতে হয়েছে Md. Kawsir Alam তাহলে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন-
- ক) আবেদনকারীর পিএসসি/জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সনদ (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)। যদি সার্টিফিকেট কারো থাকে না তাহলে জমা দেওয়া লাগবে না।
- খ) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- গ) পাসপোর্ট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ঘ) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ঙ) সন্তানদের জন্ম সনদ/সার্টিফিকেট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- চ) কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ এর ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
- ছ) স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ড এর ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
এ ধরণের ভুলের ক্ষেত্রে সার্ভার থেকে ২নং ভোটার নিবন্ধন ফরম চেক করে দেখতে হয়। যদি চাওয়া নাম ও ভোটার নিবন্ধন ফরমে থাকা নামের মধ্যে মিল পাওয়া যায় তাহলে খুব সহজে আবেদন মঞ্জুর (approve) হয়ে যায়। এই ধরণের আবেদনগুলো সাধারণত “ক” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে এবং সংশোধন করা হয় উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে।
১.৪) সম্পূর্ণ নাম যদি পরিবর্তণ করতে চান তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন-
- ক) আবেদনকারীর পিএসসি/জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সনদ (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)। যদি সার্টিফিকেট কারো থাকে না তাহলে জমা দেওয়া লাগবে না।
- খ) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- গ) ভোটার আইডি কার্ড করার পূর্বে প্রাপ্ত পাসপোর্ট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ঘ) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ঙ) সন্তানদের জন্ম সনদ/সার্টিফিকেট এর ফটোকপি।
- চ) কাবিননামা/বৈবাহিক সনদের ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
- ছ) স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ড এর ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
- জ) এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত হলফনামা এর কপি।
সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তনের আবেদনগুলোতে যতবেশি সম্ভব প্রতিলিপি (copy) জমা দেওয়া উচিত। উক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দেওয়ার পর ২নং ভোটার নিবন্ধন ফরম ও ফরমে উল্লেখিত স্বাক্ষর যাচাই করা হবে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে উক্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
যদি সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তনের আবেদনে পাবলিক পরীক্ষার সকল সনদ জমা দেওয়া হয় তাহলে সেই আবেদন “গ” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে। আর যদি কোন সনদ জমা দেওয়া না হয় বা যথাযথ কাগজপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হন তাহলে সে আবেদন “ঘ” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে।
আরো পড়ুন: ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
২. ভোটার আইডি কার্ডে পিতা-মাতার নাম সংশোধন:-
২.১) পিতা/মাতার মূল নাম ঠিক রেখে যদি শুধু নামের পদবী পরিবর্তন করতে চান যেমন- মোঃ আফরোজ উদ্দিন থেকে মোঃ আফরোজ দুধুরী হবে তাহলে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন-
- ক) আবেদনকারীর পিএসসি/জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সনদ (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)।
- যদি সার্টিফিকেট কারো থাকে না তাহলে জমা দেওয়া লাগবে না।
- খ) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- গ) পিতা-মাতার আইডি কার্ড এর ফটোকপি।
- ঘ) ভাই বোন সকলের আইডি কার্ড এবং শিক্ষা সনদ এর ফটোকপি।
- ঙ) পাসপোর্ট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- চ) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি (যদি থাকে)।
এই ধরণের আবেদনগুলো সাধারণত “ক” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে এবং সংশোধন করা হয় উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে।
২.২) যদি পিতা/মাতার মূল নাম ঠিক থাকে এবং শুধু বানানে ভুল থাকে যেমন- মোঃ শাহিন আহমেদ এর স্থলে মোঃ সাহিন আহমদ হয় তাহলে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন-
- ক) আবেদনকারীর পিএসসি/জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সনদ (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)।
- যদি সার্টিফিকেট কারো থাকে না তাহলে জমা দেওয়া লাগবে না।
- খ) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- গ) পিতা-মাতার আইডি কার্ড এর ফটোকপি।
- ঘ) ভাই বোন সকলের আইডি কার্ড এবং শিক্ষা সনদ এর ফটোকপি।
এই ধরণের আবেদনগুলো সাধারণত “ক” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে এবং সংশোধন করা হয় উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে।
২.৩) যদি পিতা/মাতর নাম সম্পূর্ণ পরিবর্তন করতে চান তাহলে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন-
- ক) আবেদনকারীর পিএসসি/জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সনদ (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)।
- যদি সার্টিফিকেট কারো থাকে না তাহলে জমা দেওয়া লাগবে না।
- খ) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- গ) পিতা-মাতার আইডি কার্ড এর ফটোকপি।
- ঘ) ভাই বোন সকলের আইডি কার্ড এবং শিক্ষা সনদ এর ফটোকপি।
- ঙ) পাসপোর্ট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- চ) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ছ) পিতার/মাতার নামীয় বিদ্যুৎ বিল এর ফটোকপি।
- জ) পিতার/মাতার নামীয় ট্যাক্স/পৌর করের রশিদ ইত্যাদি।
উপরোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দেওয়ার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। এ ধরণের আবেদনে উপযুক্ত কাগজপত্র জমা দিতে পারলে “গ” ক্যাটাগরীর অন্তর্ভূক্ত হয় এবং উপযুক্ত কাগজপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হলে আবেদন “ঘ” ক্যাটাগরীর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
আরো পড়ুন: জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) সংশোধন করুন (খুব সহজে)
৩. ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে জন্ম তারিখ ভুল হলে নিম্নোক্ত কাগজপত্রের মধ্যে যে সকল কাগজপত্রগুলো আপনার কাছে আছে সেগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন-
- ক) আবেদনকারীর পিএসসি/জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার সনদ (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)। যদি সার্টিফিকেট কারো থাকে না তাহলে জমা দেওয়া লাগবে না।
- খ) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- গ) ভাই বোন সকলের আইডি কার্ড এর ফটোকপি।
- ঘ) ভাই বোন সকলের এনআইডি নাম্বর উল্লেখিত পিতার উত্তরাধিকার/ওয়ারেশ সনদ এর কপি।
- ঙ) কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ এর ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)।
- চ) পাসপোর্ট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- ছ) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- জ) সিভিল সার্জন কর্তৃক বয়স প্রমাণ এর রিপোর্ট এর কপি।
- ঝ) সার্ভিস বই এর কপি/MPO শীট এর কপি।
- ঞ) চাকরির আইডি কার্ড এর ফটোকপি।
- ট) অফিস স্মারকে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষ এর প্রত্যয়নপত্র এর কপি।
- ঠ) পেনশন/অবসর বই এর কপি (অবসরপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে)।
- ড) মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সনদ এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রাপ্ত বিভিন্ন ভাতাদি প্রাপ্তির প্রমাণপত্র এর কপি।
উল্লেখিত কাগজপত্রগুলোর মধ্যে যে কাগজপত্র আপনার কাছে আছে সেগুলো আবেদনের সাথে জমা দিবেন। ১ দিন থেকে ৩ বছর পর্যন্ত জন্ম তারিখ পরিবর্তনের আবেদন “ক” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে। যাদের জন্ম তারিখ ৩ বছর থেকে ৫ বছর গড়মিল থাকে সে আবেদনগুলো “খ” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে। যাদের জন্ম তারিখ ৫ থেকে ১০ বছরের গড়মিল থাকে সে আবেদনগুলোগুলো “গ” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে এবং যাদের জন্ম তারিখে ১০ বছরের বেশি গড়মিল রয়েছে সেগুলো “ঘ” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে।
৪. ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী/স্ত্রী’র নাম সংশোধন:-
৪.১) ভোটার আইডি কার্ডে যদি স্বামী/স্ত্রীর নাম সংযোজন করতে হয় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ এর ফটোকপি।
- খ) স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ডএর ফটোকপি।
৪.২) স্বামী/স্ত্রীর নামে পদবী ভুল হলে বা নামের বানান ভুল হলে বা আংশিক কোন পরিবর্তন হবে সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ এর ফটোকপি।
- খ) স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ড এর ফটোকপি।
- গ) সন্তানদের এনআইডি কার্ড/জন্ম সনদ এর ফটোকপি।
- ঘ) সন্তানদের শিক্ষা সনদ এর ফটোকপি।
৪.৩) আবার স্বামী/স্ত্রীর মৃত্যজনিত কারণ বা ডিভোর্স জনিত কারণে দ্বিতীয় বিয়ে হয় এবং প্রথম স্বামী/স্ত্রীর নাম বাদ দিয়ে দ্বিতীয় স্বামী/স্ত্রীর নাম যোগ করতে হয় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) প্রথম স্বামী/স্ত্রীর তালাকনামা/মৃত্যু সনদ এর ফটোকপি।
- খ) দ্বিতীয় বার বিবাহের কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ এর ফটোকপি।
- গ) দ্বিতীয় স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ড এর ফটোকপি।
৪.৪) আবার যদি দ্বিতীয় বিবাহ ব্যতিত স্বামী/স্ত্রীর নাম সম্পূর্ণ পরিবর্তণ করতে হয় তাহলে আবেদনের সাথে উপরোক্ত কাগজপত্রগুলোসহ অন্যান্য যেসকল কাগজপত্রে স্বামী/স্ত্রীর নাম সঠিক করে লেখা আছে সেগুলো জমা দিবেন। যেমন-
- ক) ২ নং ভোটার নিবন্ধন ফরম এর ফটোকপি।
- খ) সকল সন্তানদের নাম উল্লেখিত স্বামী/স্ত্রীর উত্তরাধিকার/ওয়ারেশ সনদ এর ফটোকপি।
- গ) স্বামী/স্ত্রীর নামীয় বিদ্যুৎ বিল এর ফটোকপি।
- ঘ) স্বামী/স্ত্রীর নামীয় ট্যাক্স/পৌর করের রশিদ এর ফটোকপি।
- ঙ) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত হলফনামা।
স্বামী/স্ত্রীর সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কর্মরত অফিসার সরেজমিন তা তদন্ত করে প্রতিবেদন আকারে প্রেরণ করেন। এবং এ ধরণের আবেদনগুলো সাধাণত “ক” এবং “খ” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে।
৫. ভোটার আইডি কার্ডে জন্ম সনদ এর নম্বর সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি জন্ম সনদ এর নম্বর ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- খ) সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র এর ফটোকপি।
ভোটার আইডি কার্ডে জন্ম সনদ নম্বরের ভুল সংশোধনের আবেদনগুলো সচরাচর “ক” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে।
৬. ভোটার আইডি কার্ডে লিঙ্গ সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি উল্লেখিত লিঙ্গ ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) ২ নং ভোটার নিবন্ধন ফরম এর কপি।
- খ) মেডিকেল সার্টিফিকেট এর কপি।
- গ) সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রত্যয়নপত্র এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে লিঙ্গের ভুল সংশোধনের আবেদনগুলো সচরাচর “ক” ক্যাটাগরীর মধ্যে পড়ে থাকে।
৭. ভোটার আইডি কার্ডে জন্মস্থান সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি উল্লেখিত জন্মস্থান ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর কপি।
- খ) পাসপোর্ট এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- গ) সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রত্যয়নপত্র এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে জন্মস্থানের ভুল সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকেই সংশোধন করা হয়ে থাকে।
৮. ভোটার আইডি কার্ডে পেশা সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি উল্লেখিত পেশা ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) চাকরীরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিয়োগপত্র এর ফটোকপি।
- খ) পেশা ভিত্তিক সনদ এর ফটোকপি।
- গ) সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত পেশা পরিবর্তনের প্রত্যয়নপত্র এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে পেশা’র ভুল সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকেই সংশোধন করা হয়ে থাকে।
৯. ভোটার আইডি কার্ডে দৃশ্যমান সনাক্তকরণ চিহ্ন সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি উল্লেখিত দৃশ্যমান সনাক্তকরণ চিহ্ন ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) উপজেলা নির্বাচন অফিসারের প্রতিবেদন এর কপি।
- খ) মেডিকেল সনদ এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে দৃশ্যমান সনাক্তকরণ চিহ্নের ভুল সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকেই সংশোধন করা হয়ে থাকে।
১০. ভোটার আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি উল্লেখিত রক্তের গ্রুপ ভুল হয়ে যায় অথবা সংযোজন করতে চান তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্ট এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে রক্তের গ্রুপের ভুল সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকেই সংশোধন করা হয়ে থাকে।
১১. ভোটার আইডি কার্ডে স্থায়ী/বর্তমান ঠিকানা সংশোধন:-
যদি ভোটার আইডি কার্ডে স্থায়ী ঠিকানা/বর্তমান ঠিকানা ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি।
- খ) বিদ্যুৎ বিল এর ফটোকপি।
- গ) চৌকিদারী ট্যাক্স/পৌর করের রশিদ এর ফটোকপি।
- ঘ) সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার ভুল সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকেই সংশোধন করা হয়ে থাকে।
১২. ভোটার আইডি কার্ডে টিন নম্বর সংযোজন/সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি টিন নম্বর ভুল হয়ে যায় কিংবা সংযোজন করতে চান তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) টিন সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে টিন নম্বর সংযোজন/সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকেই সংশোধন করা হয়ে থাকে।
১৩. ভোটার আইডি কার্ডে ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর সংযোজন/সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর ভুল হয়ে যায় কিংবা সংযোজন করতে চান তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর সত্যায়িত কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর সংযোজন/সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকেই সংশোধন কনা হয়ে থাকে।
১৪. ভোটার আইডি কার্ডে পাসপোর্ট নম্বর সংযোজন/সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি পাসপোর্ট নম্বর ভুল হয়ে যায় কিংবা সংযোজন করতে চান তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) পাসপোর্ট এর সত্যায়িত কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে পাসপোর্ট নম্বর সংযোজন/সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকে সংশোধন করা হয়ে থাকে।
১৫. ভোটার আইডি কার্ডে মোবাইল/ফোন নম্বর সংযোজন/সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি মোবাইল/ফোন নম্বর ভুল হয়ে যায় কিংবা সংযোজন করতে চান তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) বিটিসিএল এর প্রত্যয়ন/বিলের কপি/রেজিস্ট্রেশন ফরম এর কপি।
- খ) মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রত্যয়ন এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে মোবাইল/ফোন নম্বর সংযোজন/সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকে সংশোধন করা হয়ে থাকে।
১৬. ভোটার আইডি কার্ডে শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলেঅ জমা দিবেন-
- ক) চাহিত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এর সত্যায়িত কপি।
- খ) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের হলফনামা এর কপি (শিক্ষাগত যোগ্যতা কমাতে চাইলে প্রযোজ্য)।
- গ) একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সরেজমিনে তদন্ত প্রতিবেদনিএর কপি (শিক্ষাগত যোগ্যতা কমাতে চাইলে প্রযোজ্য)।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধির আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকে সংশোধন করা হয়ে থাকে। কিন্ত যখন শিক্ষাগত যোগ্যতা কমানোর আবেদন করবেন সেটি “খ” ক্যাটাগরীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
১৭. ভোটার আইডি কার্ডে অসমর্থতা সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি অসমর্থতা’র তথ্য ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট/যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে অসমর্থতা সংশোধনের আবেদনগুলো “ক” ক্যাটাগরী থেকে সংশোধন করা হয়ে থাকে।
১৮. ভোটার আইডি কার্ডে ধর্ম সংশোধন:-
ভোটার আইডি কার্ডে যদি ধর্ম ভুল হয়ে যায় তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) বিবাহ নিবন্ধন সনদ এর ফটোকপি (যদি থাকে)।
- খ) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের হলফনামা এর কপি।
- গ) সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র এর কপি।
- ঘ) পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ড এর ফটোকপি।
- ঙ) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন এর কপি।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে ধর্ম সংশোধনের আবেদনগুলো “খ” ক্যাটাগরীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।
১৯. ভোটার আইডি কার্ডে বায়েমেট্রিক তথ্য সংশোধন:-
যদি ভোটার আইডি কার্ডে ছবি পরিবর্তন, চোখের আইরিশ পরিবর্তন কিংবা ফিঙ্গারপ্রিন্ট আপডেট করতে চান তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন-
- ক) ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানারের সাহায্যে সেন্ট্রাল সার্ভারে রক্ষিত আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে একই ব্যক্তি মর্মে নিশ্চিত হওয়ার পর একই ব্যক্তি মর্মে উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসারের প্রত্যয়নপত্র এর কপি।
- ভোটার আইডি কার্ডে বায়োমেট্রিক তথ্য আপডেট এর আবেদনগুলো “খ” ক্যাটাগরীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।
এই ছিলো ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে প্রশ্নের সমাধান। এর পরও যদি কোন বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকে তাহলে কমেন্টস করে আমাদের জানাবেন আমরা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে অবশ্যই শতভাগ চেষ্টা করবো। আর যদি আপনাদের এই লেখাটি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। অগ্রিম ধন্যবাদ