বাংলাদেশ লোকেশনে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ হোয়াটস অ্যাপ এবং সিগন্যালকে পেছনে ফেলে এক নম্বর অবস্থানে চলে এসেছে তুরস্কের তৈরি সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাপ বিপ – BIP।
গত এক সপ্তাহে হোয়াটস অ্যাপ ব্যবহারের প্রাইভেস সংক্রান্ত সংশয় নিয়ে প্রায় বিশ লাখ ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
হোয়াটস অ্যাপ ব্যবহারের ইউজারদের ব্যক্তিগত পরিচয় নিরাপদ অবস্থানে তাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল হোয়াটসঅ্যাপ। কিন্তু গত ২০১৪ সালে ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ কে কিনে নেয়ার পর থেকে মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন ব্যবহারকারীরা। সাম্প্রতিক ওয়াটস অ্যাপ এর নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে আবারো। মূলত তার জের ধরেই গত এক সপ্তাহে প্রায় বিশ লাখ ব্যবহারকারী কমেছে এমনটা বলেছে বিবিসি নিউজ।
২০০৪ সালে ফেইসবুক আবিষ্কার হলেও বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে তুমুল জনপ্রিয় অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু ফেইক আইডি আইডি হ্যাক হওয়া সহ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে নানা জটিলতায় রয়েছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুক নেট দুনিয়ার এক কিংবদন্তি। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেরই এখন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ফেসবুক মেসেঞ্জার এখন চ্যাটিং ভিডিও কল এবং অডিও কলের জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কি যেন একটা কমতি থেকে যায় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে। আর এই কিটার উত্তর হচ্ছে নিরাপত্তা, নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা।
এখনো ফেসবুকে ফেইক আইডি নিয়ে প্রতারণা এবং আইডি হ্যাক করে ব্ল্যাকমেইল করার সংশয়ে রয়েছেন অনেক ব্যবহারকারী। অনেকেই নানা জটিলতা ফেইস করেছেন এবং অনেকে বাধ্য হয়ে থানায় জিডি করেছেন। অনেকে হামলা-মামলা সহ নানাভাবে লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার শিকার হয়েছেন বা এখনো হচ্ছেন।
ফেইসবুকে ফেইক আইডির মাধ্যমে প্রতারিত হওয়া, ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়া কিংবা প্রাইভেসি পাবলিক করার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল হওয়ার ভয় নিয়ে ফেইসবুক ব্যবহার করছেন লাখ লাখ ব্যবহারকারী।
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকটা সংশয় থেকে মোটামুটি নিরাপদে ব্যবহার করে আসছিলেন লাখ লাখ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী। কিন্তু, ফেসবুকে যখন হোয়াটসঅ্যাপ এর মালিক, তখন নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের কারণ থেকেই যায়।
প্রাইভেসি সংশয় থেকে সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখাচ্ছে তুরস্কের আবিষ্কার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ “বিপ”। বাংলাদেশের ব্যবহারকারীরা ধারণা করছেন নতুন এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপে প্রাইভেসি নিরাপদ থাকবে। আর সেই ধারণা থেকেই বর্তমানে গুগল প্লে স্টোর থেকে সবচেয়ে বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে ‘বিপ” নামক অ্যাপ টি। যা বাংলাদেশ লোকেশনের শীর্ষে থাকা হোয়াটসঅ্যাপ, তার পরের অবস্থানে থাকা সিগন্যালকে পেছনে ফেলে এক নম্বর অবস্থান দখল করে নিয়েছে “বিপ”।
বাংলাদেশি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপস ব্যবহারকারীরা ধারণা করছেন, নতুন অ্যাপস দিয়ে মানুষের গোপন তথ্য নিরাপদ থাকবে। আর সেই কৌতুহল থেকেই গত কয়েক দিনে সবচেয়ে বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া গবেষকদের ধারণা, বাংলাদেশের মানুষ যেকোনো ভালো কিছু খুব সহজে গ্রহণ করতে পারে। তবে “বিপ” অ্যাপ কে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক ব্যবহার করাই উত্তম। হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প এবং সাপোর্ট হিসেবে কিছুদিন ব্যবহার করে তারপর পর্যাপ্ত নিরাপদ মনে হলে এর উপর ভরসা করা যায়। অপরদিকে অন্য একটি সমীকরণ ধারণা দিয়েছে তুরস্ক যেহেতু মুসলিম রাষ্ট্র, অপরদিকে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা মুসলমান। সেই দিক থেকে তুরস্কের নতুন অ্যাপ “বিপ” খুব সহজে গ্রহণ করে নিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। যদিও এই ধারণাকে সোশ্যাল মিডিয়া গবেষকেরা যৌক্তিক বলে মনে করেন নি।
আবুল হায়দার তরিক, লেখক ও সাংবাদিক।
torikbd5@gmail.com