ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা

‘ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা’ শীর্ষক প্রবন্ধটি প্রোবাংলাতে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এখানে আপনি জানতে পারবেন ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা। ভিটামিন ই ক্যাপসুল কী? ভিটামিন ই কী? ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেন আমাদের ব্যবহার করতে হবে? ভিটামিন ই কোন কোন খাদ্যে প্রাকৃতিকভাবে রয়েছে।

ভিটামিন ই কী?

ভিটামিন ই হলো আটটি ফ্যাট দ্রবণীয় যৌগের একটি গ্রুপ। এর মধ্যে চারটি টোকোফেরল এবং চারটি টোকোট্রা্ইনল বিদ্যমান। ভিটামিন ই এর ঘাটতি সাধারণত বিরল এবং ভিটামিন ই এর অভাব ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাদ্য পরিমাণে কম থাকার চাইতে বরং এর ডায়েটরি ফ্যাট হজমের অন্তর্নিহিত সমস্যার কারণেই বেশি হয়। ভিটামিন ই চর্বিতে অতিদ্রুত দ্রবণীয় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। তাই এটা খুব দ্রুত শরীরে প্রভাব বিস্তার করে। এবং এটার ঘাটতি দেখা দিলে খুব দ্রুত শরীরের তার প্রতিক্রিয়া ফুটে ওঠে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল কী?

প্রায় সময় আমরা ফার্মেসির দোকানে বয়ামের মধ্যে এক ধরনের রং বেরঙের ক্যাপসুল দেখতে পাই। এগুলো সাধারণত ভিটামিন ই ক্যাপসুল হয়ে থাকে। অনেক সময় মুদির দোকানেও এগুলো পাওয়া যায়। রাস্তাঘাটে ফেরি করেও কিছু হকার এগুলো বিক্রি করে। কোন ধরনের ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করা উচিত তা এই “ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা” প্রবন্ধে পরে বলছি।

ভিটামিন ই যেহেতু একটি ফ্যাট দ্রবনীয় পুষ্টিগুণ। তাই ভিটামিন ই সমৃদ্ধ জৈব বস্তু থেকে বৈজ্ঞানিক পন্থায় সেই তেল পৃথক করে জেলোটিনের কোটিং কৃত ক্যাপসুলে বাজারজাত করা হয়। জেলোটিন হচ্ছে প্রাণীর হাড় থেকে নির্মিত পদার্থ।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর প্রয়োজনীয়তা কী?

ভিটামিন ই হলো শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন। এর অভাবে হলে চুল পড়ে যায়, পেশি দুর্বল হয়, চোখে ঝাপসা দেখা যায়, ইত্যাদি সমস্যা হয়। এসকল সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ই যুক্ত খাবার রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। ভিটামিন ই এর অভাব পূরণ করতে সয়াবিন, বাদাম, ব্রকোলি, মাছ, শাক, অ্যাভোক্যাডো ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা

ভিটামিন ই এর অভাবে কী কী সমস্যা হতে পারে?

*চুল পাতলা হয়ে যায় ভিটামিন ই এর অভাবে।

প্রতিদিনের খাদ্যে ভিটামিন ই থাকলে চুল ও শরীরের ত্বক ভালো থাকে। ভিটামিন ই ত্বককে উদীপ্ত ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সহায়তা করে। ই এর অভাবে চুল পড়ে যাওয়া ও চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। তাই অনেকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল সরাসরি মাথার চুল ও ত্বকে ব্যবহার করে।

*পেশির দুর্বলতার জন্য ভিটামিন ই এর অভাব দায়ী।

অনেক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে, ভিটামিন ই এর অভাবে মায়োপ্যাথি রোগ হয়। মূলত শরীরে পেশির আঁশের দুর্বলতা হলে এ সমস্যা হয়। এ কারণে শারীরিক দুর্বলতা অনুভূত পারে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ই রাখা জরুরি।

*ভারসাম্যহীনতার জন্যও ভিটামিন ই দায়ী।

ভিটামিন ই এর ঘাটতি হলে শরীরে ভারসাম্যহীন বোধ হয়। মূলত ভিটামিন ই এর অভাবে স্নায়ুগুলোতে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বৃদ্ধি পায়। এ কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়।

*চোখে ঝাপসা দেখা

অনেকে প্রায়ই চোখে ঝাপসা দেখেন, বিশেষ করে রাতের সময়। এটা ভিটামিন ই এর অভাবে হতে পারে। ভিটামিন ই এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান চোখের রেটিনাকে সুরক্ষা প্রদান করে। এটার অভাবে চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া এই ভিটামিনের অভাবে শরীরে অল্প রক্তশূন্যতাও হতে পারে।

*ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে ভিটামিন ই প্রয়োজন।

আমাদের অনেকের লিভারে প্রচণ্ড ফ্যাট জমে যায়। বিশেষ করে যারা মাদকাসক্ত অর্থাৎ মদ পানকারী তাদের লিভার চর্বিযুক্ত হয়ে থাকে। ভিটামিন ই এই ফ্যাটি লিভার থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেন ব্যবহার করতে হবে?

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা প্রবন্ধে আমরা জানলাম ভিটামিন ই এর প্রয়োজনীয়তা এবং উপকারিতা। এবার আমরা জানব ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর প্রয়োজন কখন।

আমাদের স্বাভাবিক খাদ্যে ভিটামিন ই রয়েছে। কিন্তু অনেক সময় সুষম খাদ্যের অভাবে ভিটামিন ই এর অভাব দেখা যায়। বিশেষ করে ছোট বাচ্চা এবং বৃদ্ধদের। কখনো কখনো নারীদেরও এই সমস্যা হতে পারে। তখন ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে হয় কৃত্রিমভাবে ভিটামিন ই শরীরে প্রবেশ করাতে। অবশ্যই ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণ করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর অপকারিতা।

কোনো জিনিসই অতিরিক্ত ভালো নয়। তেমনি ভাবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও ব্যবহার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ভিটামিন ই বেশি পরিমাণে শরীরে থাকলে রক্ত তরল হয়ে যায়। হঠাৎ কোথাও কেটে গেলে অনবরত রক্ত ঝরতে থাকে। রক্ত জমাট বাঁধে না। তাই অবশ্যই ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটা আবশ্যক।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল কোথায় পাওয়া যায়?

সাধারণত ফার্মেসিতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়। মুদি দোকান অথবা হকারেরাও এটা বিক্রি করে। কিন্তু সেগুলো নিরাপদ নয়। কেননা ওরা খুচরা অর্থাৎ একটি করে ক্যাপসুল বিক্রি করে। ফলে জানা যায় না এর উৎপাদক কোম্পানি কোনটা এবং এটার মেয়াদ আছে কি না। অনেক সময় মেয়াদোত্তীর্ণ বা ভেজাল ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়।

তাই ভিটামিন ই ক্যাপসুল ক্রয় করার পূর্বে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন মোতাবেক ক্রয় করার অনুরোধ করা হচ্ছে।

About Juyel Ahmed Liton

সুপ্রিয় “প্রোবাংলা” কমিউনিটি, ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ ছিলো এবং হয়তো সেই আকর্ষণটা অন্য দশ জনের থেকে একটু বেশি। ওয়েবসাইট, টাইপিং, আর্টিকেল লেখাসহ টেকনোলজি সবই আমার প্রিয়। জীবনে টেকনোলজি আমাকে যতটা ইম্প্রেস করেছে ততোটা অন্যকিছু কখনো করতে পারেনি। আর এই প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ থেকেই লেখালেখির শুরু.....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *