প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম, কিভাবে পাবেন, কোথায় পাবেন, দেশের সকল প্রকার প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা, PDF ও Word File রয়েছে দেখুন এই আলোচনায়।

প্রাতিষ্ঠানিক কাজকর্মে ও সরকারি সেবা পেতে প্রত্যয়ন পত্র অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে জেনে নিন- একজন ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তার বৈশিষ্ট্যের প্রাতিষ্ঠান সনদই প্রত্যয়ন পত্র। বেসরকারি/ সরকারি চাকরি, স্কুল/ কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে, সরকারি ভাতা ও নাগরিক সুবিধায়, জন্ম নিবন্ধন/জাতীয় পরিচয় পত্র ও পাসপোর্ট তৈরিতে প্রত্যয়ন পত্র লাগে।

তাই প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম ও আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা সংগ্রহ করুন এখান থেকে।

প্রত্যয়ন পত্র কি

প্রত্যয়ন পত্র বলতে বুঝানো হয় প্রমাণ, শাখের স্বীকৃতি পত্র। সাধারণভাবে প্রত্যয়ন পত্র হলো একজন ব্যক্তির জন্য কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক সত্যায়িত স্বীকৃতির কপি।

কোন মানুষ তার কর্ম জীবনে/ ব্যক্তি জীবনে কেমন, তার চারিত্রিক, শারীরিক, মানসিক ও নাগরিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত তথ্যের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পত্র দেওয়া হয়। বর্তমানে মৌখিক স্বাক্ষ্য সর্বদা গ্রহণযোগ্য না হওয়ায়, এই প্রত্যয়ন পত্রের সত্যায়িত লিখিত কপি ব্যবহৃত হয়।

প্রত্যয়ন পত্র কেন প্রয়োজন

বর্তমানে নানারকম সরকারি সুবিধা ভোগ করার জন্য প্রত্যয়ন পত্রের গুরুত্ব অনেক বেশি। একইসাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও চাকরির ক্ষেত্রে প্রত্যয়ন পত্রের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে অনেক পূর্ব থেকেই। তাই প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম জানা গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চাকরির ক্ষেত্র ও সরকারি কর্মকাণ্ডে প্রত্যয়ন পত্রের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হলো-

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যয়ন পত্রের প্রয়োজনীয়তা

শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যালয় পরিবর্তন, বিদ্যালয়ের ভিত্তিক নানারকম আন্তঃবিদ্যালয়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ, উপবৃত্তি, কলেজে ভর্তি হওয়া, ভার্সিটিতে স্কলারশিপ পাওয়া ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে প্রত্যয়ন পত্র লাগে।

প্রত্যয়ন পত্র একজন শিক্ষার্থীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করে। তাই এসকল কার্যক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন পত্র নিতে হয়।

প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির ক্ষেত্রে প্রত্যয়ন পত্রের প্রয়োজনীয়তা

বিভিন্ন প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির জন্য প্রত্যয়ন পত্র লাগে। কোম্পানি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, সরকারি চাকরির জন্য আবেদন, এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে যাওয়া, প্রাতিষ্ঠানিক ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন পত্র নিতে হয়।

সরকারি চাকরির জন্য কমপক্ষে দুইজন সরকারি কর্মজীবী কর্তৃক আবেদনপত্র সত্যায়িত করতে হয়। চারিত্রিক, শারীরিক, মানসিক ও নাগরিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত প্রত্যয়ন পত্র লাগে। কোটার সাহায্যে চাকরি পেতেও কোটার স্বপক্ষে প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়মে সঠিক সনদ জমা দিতে হয়।

সরকারি কর্মকাণ্ডে প্রত্যয়ন পত্রের প্রয়োজনীয়তা

বর্তমানে সরকারি কর্মকাণ্ড গুলোতে প্রত্যয়ন পত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি। জাতীয়তা সনদ/চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্র/ইউনিয়ন পরিষদ প্রত্যয়ন পত্র আপনার চারিত্রিক, রাজনৈতিক ও জাতীয়তা প্রমানে গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন, এন আইডি কার্ড, পাসপোর্ট তৈরিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রত্যয়ন পত্র লাগে। এছাড়াও সরকার কর্তৃক দেশের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ভাতা ও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়।

এতিম সনদ, বয়স প্রমাণের সনদ, মুক্তিযোদ্ধা সনদ, ভূমিহীন সনদ, উপজাতি সনদ ইত্যাদি নানা প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম সরকারি কর্মকাণ্ডে প্রয়োজন হয়।

বিবাহিত সনদ, পুনঃবিবাহ সনদ, অবিবাহিত প্রত্যয়ন পত্র রয়েছে যা সামাজিক কর্মকান্ডে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

প্রত্যয়ন পত্র কত প্রকার?

প্রতিষ্ঠান ও প্রয়োজন ভেদে বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়ন পত্র রয়েছে। প্রত্যয়ন পত্রের শ্রেনীকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

এই তিনটি প্রধান শ্রেণীর অভ্যন্তরে অনেক ধরনের প্রত্যয়ন পত্র রয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি প্রত্যয়ন সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে প্রায় ৩৫ প্রকারের সরকারি প্রত্যয়ন পত্রের তালিকা রয়েছে।

এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন ও চাকরির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম অনুযায়ী সনদ লাগে। নিচে অতি প্রয়োজনীয় কয়েকটি প্রত্যয়ন পত্রের তালিকা দেওয়া হলো-

ইত্যাদি প্রত্যয়নপত্র বর্তমানে ব্যবহৃত হয়। নিচে উপরোক্ত প্রত্যয়ন পত্র গুলো ছাড়াও বাংলাদেশের সকল প্রকার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম ও নমুনা দেখতে পাবেন।

প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন

বর্তমানে বহু ধরনের প্রত্যয়নপত্রের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। প্রাতিষ্ঠানিক প্রত্যয়নপত্রের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। আপনার কাঙ্খিত বিষয় উল্লেখ করে, নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে দরখাস্ত লেখার নিয়মে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন পত্র লিখতে পারেন।

নিচে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন করার কয়েকটি নমুনা দেওয়া হলো-

বিদ্যালয়ে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়মে সনদ পেতে আবেদন –

তারিখ – ২৩/৩/২০২০

বরাবর
প্রধান শিক্ষক
’ক‘ হাই স্কুল
রবিরবাজার, সিলেট।

বিষয়: প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন।

জনাব,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত ছাত্র। আমার নাম________, আমি নবম শ্রেণীর_বিভাগের ছাত্র। ২০২২ সালের জেএসসি পরীক্ষায় আমি এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার জেএসসি পরীক্ষার রোল নং_ রেজিঃ নং__। দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ আমি আপনার বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছি। আমি কখনোই বিদ্যিলয়ের আইন বিরোধী কাজে লিপ্ত হইনি। বর্তমানে আমার বাবার কর্মস্থল পরিবর্তন হওয়ায় আমি সহ আমার পরিবারকে অন্যত্র অবস্থান করতে হবে। তাই আমি এই বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন অব্যাহত রাখতে পারছি না। এমতাবস্থায়, নতুন বিদ্যালয় ভর্তির জন্য আপনার স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়ন পত্র আমার একান্ত প্রয়োজন।

অতএব, উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা করে আমার বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ গুণাবলী উল্লেখপূর্বক একটি প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করলে কৃতজ্ঞ হব।

আপনার একান্ত বাধ্যগত ছাত্র
‘ক’
শ্রেণী: নবম
বিভাগ: _ রোল নং_

প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন প্রক্রিয়া একই। উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করে প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়মে সনদ পেতে আবেদন করতে হবে।

চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন

চারিত্রিক সনদপত্র, নাগরিক সনদপত্র বা চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন পত্রের নমুনা দেওয়া হলো-

তারিখ:-
বরাবর
মাননীয় চেয়ারম্যান
রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদ
মেঘনা, কুমিল্লা।

বিষয়: প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন।

জনাব,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি মোঃ _( আপনার পূর্ণ নাম), পিতাঃ……………. (বাবার পূর্ণ নাম লিখুন), মাতাঃ_ (মায়ের পূর্ণ নাম লিখুন), গ্রামঃ_, ডাকঘরঃ_, থানাঃ_, জেলাঃ_। আমি আপনার ইউনিয়নের একজন সাধারণ নাগরিক। গত //_ ইং তারিখে আমার _ পদে চাকরি হয়। চাকরিতে যোগদানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হিসেবে আমার একটি চারিত্রিক সনদপত্র/নাগরিক সনদপত্র প্রয়োজন।
অতএব, মহোদয়ের নিকট আবেদন এই যে, আমার উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা করে আমাকে একটি নাগরিক সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করলে কৃতজ্ঞ হব।

বিনীত নিবেদক
‘ক’
মোবাইল নম্বর:_ গ্রাম:_
রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদ।

এভাবে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে আবেদন করুন। তারপর প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে সনদ দেওয়া হবে।

চাকরির প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন

চাকরি পেতে প্রাতিষ্ঠানিক প্রত্যয়ন পত্রের জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন-

তারিখ:_
বরাবর
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড।

বিষয়: প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন।

জনাব,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি মোঃ _( আপনার পূর্ণ নাম), পিতাঃ_. (বাবার পূর্ণ নাম লিখুন), মাতাঃ_ (মায়ের পূর্ণ নাম লিখুন), গ্রামঃ_, ডাকঘরঃ_, থানাঃ_, জেলাঃ__। আমি আপনার প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক টেকনিশিয়ান বিভাগে কর্মরত একজন নিয়মিত কর্মী। আমি গত ০২-০৮-২০১১৮ সাল থেকে বর্তমান অবদি নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সাথে আপনার প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছি। সম্প্রতি, বৈদেশিক একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে আমার কর্মচুক্তি হয়েছে। সেখানে নিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হিসেবে, এই প্রতিষ্ঠানের গত পাঁচ বছরের কর্ম অভিজ্ঞতার একটি প্রত্যয়ন পত্র প্রয়োজন।

অতএব, মহোদয়ের নিকট আবেদন এই যে, আমার উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা করে আমাকে একটি পেশা সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করলে কৃতজ্ঞ হব।

বিনীত নিবেদক
‘ক’
ইলেকট্রনিক টেকনিশিয়ান।
বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড, ঢাকা।

আপনি যেই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন সেই প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছে উপরোক্তভাবে প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়মে সনদ পেতে আবেদন করবেন।

উপরোক্ত তিনটি প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন করার নিয়ম ছাড়াও আরো বহু প্রাতিষ্ঠানিক প্রত্যয়ন পত্রের আবেদনপত্র রয়েছে। তবে সকল আবেদনপত্রের গঠন প্রায় একই। শুধুমাত্র নিজের প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু পরিবর্তন করে এবং যার কাছে আবেদন করছেন তার পদবী উল্লেখ করে অন্যান্য আবেদনগুলো করতে পারবেন।

অনলাইন প্রত্যয়ন পত্র আবেদন

বাংলাদেশের সরকারি কর্মকাণ্ডের প্রয়োজনীয় সকল প্রকার প্রত্যয়ন পত্র পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে। এখন প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম অনুসরণ করতে হয় না। পূর্বের মতো এখন সিটি কর্পোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ বা চেয়ারম্যান অফিসে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য ছুটতে হয় না।

বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত prottoyon.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে এ সকল সনদের জন্য আবেদন এবং সংগ্রহ করতে পারবেন। এখানে প্রায় ৩৫ টি সনদ বা প্রত্যয়ন পত্রের ব্যবস্থা রয়েছে।

অনলাইন প্রত্যয়ন পত্র আবেদন করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন-

  • প্রথমেই, https://prottoyon.gov.bd -এই লিংকে ভিজিট করুন।
  • এবার, ড্যাশবোর্ড থেকে উপরের ‘ফ্রি একাউন্ট খুলুন’ অপশনে ক্লিক করুন।
অনলাইন প্রত্যয়ন পত্র আবেদন
অনলাইন প্রত্যয়ন পত্র আবেদন
  • সাধারণ জনগণের জন্য নাগরিক এবং কোন প্রাতিষ্ঠানিক সেবা প্রধানের জন্য প্রশাসনিক সিলেক্ট করুন।
  • নাগরিক একাউন্টের জন্য জন্ম নিবন্ধন/ জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মতারিখ ও মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করুন।
  • একাউন্ট খোলা সম্পন্ন হলে, মোবাইল নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
  • এবার, সরকারি সনদের তালিকা থেকে আপনার কাঙ্ক্ষিত সনদটি সিলেক্ট করুন। তারপর ধারাবাহিকভাবে যাবতীয় তথ্য দিয়ে আবেদন করুন।
অনলাইনে সরকারি ওয়েবসাইট
অনলাইনে সরকারি ওয়েবসাইট

এভাবে অনলাইনে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে প্রথম পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

প্রত্যয়ন পত্র একটি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পত্র বা কোন বিশিষ্ট ব্যক্তির সত্যায়িত স্বাক্ষ্য। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য উল্লেখ করে প্রত্যয়ন পত্র কম্পিউটার টাইপ করে প্রিন্ট করা থাকে। তবে প্রিন্টার কপি না থাকলে অফসেট কাগজে স্পষ্ট ভাষায় হাতে লিখিত হতে হবে।

প্রত্যয়ন পত্র লেখার ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু নিয়ম হলো-

  • প্রত্যয়ন পত্রের শুরুতে প্রাতিষ্ঠানিক স্মারক নং ও তারিখ উল্লেখিত থাকবে।
  • প্রত্যয়ন পত্রের শিরোনামে ‘প্রত্যয়ন পত্র’ লেখা থাকবে।
  • যাকে প্রত্যয়ন করা হচ্ছে তার সম্পূর্ণ নাম, পিতা মাতার নাম ও সম্পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ থাকবে।
  • যে বিষয়ের উপর প্রত্যয়ন করা হচ্ছে তা স্পষ্ট ভাষায় এবং সংক্ষেপে লিখিত থাকবে।
  • যিনি প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করবেন তার নাম এবং স্বাক্ষর উভয় উল্লেখিত থাকবে।
  • প্রত্যয়ন পত্র প্রদানকারী ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের সিলমোহর থাকবে।
  • উদ্দেশ্য এর সাথে প্রত্যয়ন পত্রের বিষয়বস্তু মিল থাকতে হবে।
  • প্রত্যয়ন প্রদানকারী ব্যক্তির নিরপেক্ষতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম বিবেচনায় রেখে প্রত্যয়ন পত্র লিখতে হবে।

সরকারি প্রত্যয়ন পত্র

সরকারি কার্যক্রম পরিচালনায়, নাগরিক সুবিধা ভোগের জন্য যেসকল প্রত্যয়ন পত্র ব্যবহৃত হয়, সেগুলোই সরকারের প্রত্যয়ন পত্র। যেমন, চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্র, উত্তরাধিকার সনদ, মৃত্যু সনদ, জাতীয়তা সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, প্রতিবন্ধী সনদ ইত্যাদি।

prottoyon.gov.bd থেকে সকল সরকারি সনদ/ সরকারি প্রত্যয়ন পত্র তালিকা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

অফিসিয়াল প্রত্যয়ন পত্র

অফিসিয়াল প্রত্যয়ন পত্র বলতে, প্রাতিষ্ঠানিক কাজকর্মে ব্যবহৃত প্রত্যয়ন পত্রকে বুঝায়। আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে এবং অন্য প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত হতে চাইলে, পূর্বের প্রতিষ্ঠানের অনাপত্তি সূচক প্রত্যয়ন পত্রই অফিশিয়াল প্রত্যয়ন পত্র। বর্তমানে নিম্নোক্ত প্রাতিষ্ঠানিক প্রত্যয়ন পত্রগুলো বেশি প্রয়োজন হয়-

  • নাগরিক সনদপত্র
  • চারিত্রিক সনদপত্র
  • বিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্র
  • কলেজের প্রত্যয়ন পত্র
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্র
  • চাকরির প্রত্যয়ন পত্র
  • কোম্পানির প্রত্যয়ন পত্র

অফিসিয়াল প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়মও অন্যান্য প্রত্যয়ন পত্রের মতোই।

বিবিধ প্রত্যয়ন পত্র

বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোম্পানি, সরকারি প্রতিষ্ঠান, চেয়ারম্যান প্রদত্ত প্রত্যয়ন ছাড়া আন্তঃব্যক্তিক বিভিন্ন কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রত্যয়ন পত্রই বিবিধ প্রত্যয়ন পত্র।

প্রত্যয়ন meaning in English

প্রত্যয়ন পত্রের ইংরেজি পারিভাষিক শব্দ Attestation letter। যার অর্থ প্রমাণ,সাক্ষ্য প্রভৃতি। কোন ব্যক্তি তার কর্মজীবনে/ ব্যক্তি জীবনে কেমন, তার চারিত্রিক, শারীরিক, মানসিক ও নাগরিক গুণাবলী সম্পর্কিত সত্যায়িত স্বীকৃতি পত্রই প্রত্যয়ন পত্র বা Attestation letter.

প্রত্যয়ন পত্র নমুনা

বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারিসহ অনেক প্রত্যয়ন পত্র রয়েছে। আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম ও তার নমুনা এখানেই পাবেন। নিচের সকল প্রকার প্রয়োজনীয় প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা দেওয়া হলো:

প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা ফরম্যাট ডাউনলোড

চারিত্রিক সনদ ফরমেট ডাউনলোডজাতীয়তা সনদ/নাগরিকত্ব সনদ ফরমেট ডাউনলোড
বয়স প্রমাণের সনদ ফরমেট ডাউনলোডউত্তরাধিকার প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
মৃত ব্যক্তির প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডওয়ারিশ সনদের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
ডাক্তারের প্রত্যয়ন পত্র। ডাক্তার অবসরের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডশিশুদের জন্ম নিবন্ধনের জন্য ডাক্তারের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
জন্ম নিবন্ধন করতে স্কুলের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডনতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন প্রত্যয়ন পত্র। ভোটার এলাকা স্থানান্তর প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডজাতীয় পরিচয় তথ্য সংশোধনের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
একই ব্যক্তির প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডস্কুলের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
সরকারি চাকরির প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডকলেজ প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
বেসরকারি চাকরির প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডমাদ্রাসার প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
কোম্পানির প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডউপবৃত্তির প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডকওমি মাদ্রাসার প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডপ্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
প্রাতিষ্ঠানিক প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডঅভিভাবক সম্মতির প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
পারিবারিক প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডসম্প্রদায় সনদের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
বিবাহিত সনদ ফরমেট ডাউনলোডকৃষি প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
অবিবাহিত সনদ ফরমেট ডাউনলোডবার্ষিক আয়ের সনদ/ প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
পুনঃবিবাহ সনদের প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডমাসিক আয়ের সনদ/ প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
বিধবা প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোডআর্থিক অসচ্ছলতার প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
বেকারত্ব সনদ ফরমেট ডাউনলোডআর্থিক সহায়তার প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
এতিম সনদ ফরমেট ডাউনলোডপ্রতিবন্ধী সনদ ফরমেট ডাউনলোড
মুক্তিযোদ্ধা সনদ ফরমেট ডাউনলোডভূমিহীন সনদ ফরমেট ডাউনলোড
উপজাতি সনদ ফরমেট ডাউনলোডনিঃসন্তান প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট ডাউনলোড
অনাপত্তি সনদ ফরমেট ডাউনলোডঅবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি সনদ ফরমেট ডাউনলোড

প্রত্যয়ন পত্র english

বাংলাদেশের শিক্ষা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এবং কোম্পানিতে ইংরেজি প্রত্যয়ন পত্র দেওয়া হয়। নিচে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি ইংরেজী প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা দেওয়া হলো-

Ideal School and College
Meghna, Cumilla
Testimonial

Date : 13/6/2023
To :
Ref :

This is to certify/notify that name:_, father name:_, mother name:_, is a regular student of Ideal School and College. He/ She is a student of class:_, Roll no:____Section:____ and 2023 season. As far as i know, his/ her behaviour is very good.

I wish her every success in life.

Signature.

প্রতিষ্ঠানভেদে ইংরেজি প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়মও কিছুটা ভিন্ন হয়।

প্রত্যয়ন পত্র pdf

প্রত্যয়ন পত্রের পিডিএফ কপি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ব্যবহার করা যায়। প্রয়োজনে তা নিজের প্রতিষ্ঠান অনুসারে এডিট করতে পারবেন।

উপরে উল্লেখিত প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম এর নমুনার তালিকা থেকে ক্লিক করে সকল প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা পাবেন। একই সাথে প্রত্যায়ন পত্র pdf কপিও ডাউনলোড করতে পারবেন।

প্রত্যয়ন পত্র ফরম্যাট

প্রতিটি প্রত্যয়ন পত্রের ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকে। উদ্দেশ্য অনুযায়ী প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম ও প্রাতিষ্ঠানিক সনদের গঠন ভিন্ন হয়। উপরে উল্লেখিত প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা তালিকায় সকল প্রকার প্রত্যয়ন পত্র ফরম্যাট পাবেন।

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ’s)

একই ব্যক্তির প্রত্যয়ন পত্র কি?

যখন কোন একই ব্যক্তির নাম বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক রেকর্ডে ভিন্নভাবে উল্লেখিত হয়, তখন সেই ভিন্ন ভিন্ন নামের ব্যক্তি যে একজনই, এই মর্মে প্রত্যয়ন করাই একই ব্যক্তির প্রত্যয়ন পত্র।

প্রত্যয়ন পত্র পেতে কি টাকা লাগে?

অফলাইনে প্রত্যয়ন পত্র পেতে কোন টাকা লাগে না। তবে অনলাইনে prottoyon.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে প্রত্যয়ন পত্র পেতে চাইলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি দিতে হয়।

শেষ কথা

প্রত্যয়ন পত্র আমাদের নানারকম প্রাতিষ্ঠানিক কাজকর্মের সাথে যুক্ত। প্রত্যয়ন পত্রের ব্যবহার সর্বদাই রয়েছে। তাই এই আলোচনায় দেশের সকল নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম ও তুলে ধরা হয়েছে। লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এমন প্রয়োজনীয় সকল প্রকার তথ্য পেতে প্রোবাংলার (ProBangla) সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।

About Juyel Ahmed Liton

সুপ্রিয় “প্রোবাংলা” কমিউনিটি, ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ ছিলো এবং হয়তো সেই আকর্ষণটা অন্য দশ জনের থেকে একটু বেশি। ওয়েবসাইট, টাইপিং, আর্টিকেল লেখাসহ টেকনোলজি সবই আমার প্রিয়। জীবনে টেকনোলজি আমাকে যতটা ইম্প্রেস করেছে ততোটা অন্যকিছু কখনো করতে পারেনি। আর এই প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ থেকেই লেখালেখির শুরু.....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *